শিরোনাম
Passenger Voice | ১২:২৯ পিএম, ২০১৯-১২-২৬
কুমিল্লা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরটি কুমিল্লার উত্তর-পশ্চিমে অর্থাৎ মূল শহর থেকে ৩.৩ কি.মি. দূরে গড়ে উঠেছে। বিমান বন্দরটি ৭৭ একর জায়গা নিয়ে অবস্থিত। বর্তমানে এই বিমানবন্দরের পাশে ইপিজেড রয়েছে। কুমিল্লা বিমানবন্দর এর সম্পর্কে প্রাপ্ত তথ্যমতে, কুমিল্লা এয়ারপোর্ট ১৯৪০ সালে স্থাপিত হয়। ২য় বিশ্ব যুদ্ধ চলাকালীন অনেকটা তড়িঘড়ি করেই এই এয়ারপোর্ট স্থাপন করে আমেরিকা। এই এয়ারপোর্ট এ আমেরিকার কিছু যুদ্ধ বিমান উঠানামা করত জাপানি বিমানকে পাহারা দেয়ার জন্য।
অখ্যাত ইতিহাস প্রনেতা এমএমআর এর উদ্বৃতিতে জানা গেছে, “১৯৫০ সাল থেকে শুরু করে ১৯৮১ সাল পর্যন্ত এই বিমান বন্দর হতে তেজগাঁও পুরান বিমান বন্দরে অভ্যন্তরীন বিমান চলাচল করত। তারপর ঢাকার জিয়া আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর (বর্তমানে হযরত শাহ জালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর) স্থাপিত হওয়ার পর থেকে কুমিল্লা এয়ারপোর্ট এর কার্যক্রমও শেষ হয়ে যায়। অর্থাৎ অজ্ঞাত কারনে বন্ধ হয়ে যায় প্রাচীন এই বিমান বন্দর। তবে এমএমআর এর এই তথ্যগুলোর সাথে কিছুটা দ্বিমত পোষন করেছেন তরুন ইতিহাস বিশ্লেষক ম্যাকলুক। লন্ডনের এই নাগরিকের মতে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন বৃটিশদের উদ্যোগেই এই এয়ারপোর্ট স্থাপিত হয়েছিল এবং সেখানে বৃটিশ আর্মির ক্যাম্প স্থাপন করা হয়েছিল।
সূত্র জানায়, দেশীয় এয়ারলাইন্স সমূহ ফ্লাইট পরিচালনা করতে সম্মত হলেই কুমিল্লা বিমান বন্দরে পুনরায় বিমান চলাচল শুরু হবে। কুমিল্লা বিমান বন্দরে ফ্লাইট পরিচালনার জন্য ৭টি দেশীয় এয়ারলাইন্সকে চিঠি দিয়েছে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ। আর বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের কাছে এ ব্যাপারে মতামত চেয়ে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়।
সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা, ব্যবস্থাপনা, যন্ত্রপাতি, জনবল থাকার পরও শুধু উদ্যোগের অভাবে দুই যুগ ধরে বন্ধ রয়েছে কুমিল্লা বিমানবন্দর। কুমিল্লা বিমান বন্দর পুনরায় চালু এবং অভ্যন্তরীণ রুটে বিমান চলাচলের দাবিতে কুমিল্লার রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠনের নেতা, সাংবাদিক ও সর্বস্তরের জনগণ ইতোমধ্যে মানবন্ধনসহ নানা কমৃসূচি পালন করে। এরই প্রেক্ষিতে কুমিল্লা বিমান বন্দর চালুর প্রক্রিয়া চলছে।
কুমিল্লা বিমান বন্দর সূত্রে জানা যায়- কুমিল্লা বিমানবন্দর এখনো চালু অবস্থাতেই আছে। শুধু বিমান ওঠা নাম করে না। এ বিমান বিন্দর থেকে আন্তর্জাতিক রুটে চলাচলকারী সব বিমানকে আশাপথের সিগন্যাল দেয়া হয়। আর এ কাজ করে কুমিল্লা বিমান বন্দর প্রতি মাসে আয় করে ২০ থেকে ২৫ লাখ টাকা। কুমিল্লা বিমান বন্দরে নেভিগেশন ফ্যাসিলিটিজ, কন্ট্রোল টাওয়ার, ভিইচএফ সেট, এয়ার কমিউনিকেশন, যন্ত্রপাতি, ফায়ার স্টেশন, ফায়ার সার্ভিসহ সব সুবিধা রয়েছে।
এদিকে কুমিল্লা বিমান বন্দর চালুর বিষয়ে বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য মুজিবুল হক মুজিব, স্থানীয় সংসদ সদস্য নাসিমূল আলম চৌধুরী নজরুল বিমান বন্দর এলাকা পরিদর্শন করেন। এ সময় তারা বিমান বন্দরটি চালুর বিষয়ে আন্তরিক প্রচেষ্টা চালাবেন বরে আশ্বাস প্রদান করেন। এরপর বেক্সিমকো গ্র“পের পরিচালক মি. ওকে চৌধুরী কুমিল্লা এলে জিএমজির ফ্লাইট চালুর ব্যাপারেও দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়। বাংলাদেশে ৩টি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, ৫টি অভ্যন্তরীণ বিমান বন্দর এবং ৭টি সট টেক অব ল্যান্ড ল্যান্ডিং (স্টক) বিমান বন্দর রয়েছে। এই ৭টি বিমান বন্দররের মধ্যে কুমিল্লা বিমানবন্দরটি একটি।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্দের সময় নির্মাণ করা কুমিল্লা বিমান বন্দর থেকে ১৯৭৬ সালে আগ পর্যন্ত অভ্যন্তরীণ রুটে বিমান চলাচল করেছিল। কুমিল্লার অনেক যাত্রী ঢাকা-চট্টগ্রামসহ দেশের বিবিন্ন স্থানে যাতায়াত করেছেন বিমানের মাধ্যমেই। কিন্তু ১৯৮৬ সালের পর কুমিল্লা বিমানবন্দর থেকে সব ধরনের বিমান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর স্টল বিমান সার্ভিস সুবিধাসহ কুমিল্লা বিমান বন্দর এলাকার পাশে রফতানি প্রক্রিয়াজাতরকরণ অঞ্চল করে।
বিমান সূত্র জানায়- কুমিল্লা ইপিজেড কর্তৃপক্ষ বিমান বন্দর চালু দেখতে চায়, কারণ অনেক বিনিয়োগকারী বিমান বন্দরের ব্যাপারে দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। আর কুমিল্লা বিমান বন্দর চালু হলে কুমিল্লার ঐশ্বর্য বেড়ে যাবে। সিটি কপোরেশনের গুরুত্বও বেড়ে যাবে এবং কুমিল্লা ইপিজেডে নতুন নতুন বিদেশী কোম্পানি বিনিয়োগ করতে আশ্বস্থ হবেন। কুমিল্লার সার্বিক উন্নিতিতে ভূমিকা রাখবে কুমিল্লা বিমান বন্দর। এটাই কুমিল্লাবাসীর আশা ও প্রত্যশা।
এখন আমাদের তরুণ প্রজন্মের একটাই দাবি সেই বন্ধ হওয়া কুমিল্লা এয়ারপোর্ট আবারো পূনরায় চালু করা হোক, কুমিল্লা এয়ারপোর্ট আগের মতো ফিরে আসুক।
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত 2019 - 2025 PassengerVoice | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ
Developed By Muktodhara Technology Limited.
পাবলিক মতামত