শিরোনাম
Passenger Voice | ১১:১৯ এএম, ২০২৫-১২-০৮
টাকা ফেরতের প্রতিশ্রুতি পূরণ না হওয়ায় দ্রুত আমানত ফেরত দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংকের গ্রাহকরা। রোববার (৭ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তারা ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, দীর্ঘ দেড় বছর অপেক্ষার পরও ব্যাংকগুলো থেকে নিজেদের সঞ্চিত অর্থ তুলতে পারছেন না।
গ্রাহকরা জানান, গত মাসে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে টাকা উত্তোলনের আশ্বাস দিলেও সেই সময় পেরিয়ে গেছে। ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহও কেটে গেছে, কিন্তু ব্যাংক থেকে এখনো কোনো টাকা দেওয়া শুরু হয়নি। তাই তারা জানতে চান- আর কতদিন পর তারা নিশ্চিতভাবে নিজের টাকা তুলতে পারবেন।
গত ৫ নভেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংকে এক সংবাদ সম্মেলনে গভর্নর আহসান এইচ মনসুর জানিয়েছিলেন, মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে প্রত্যেক আমানতকারী সর্বোচ্চ ২ লাখ টাকা তুলতে পারবেন। তিনি বলেন, একীভূত হওয়ার পর এই ব্যাংকটি দেশের সবচেয়ে বড় ব্যাংকে পরিণত হবে। এটি সরকারি মালিকানায় হলেও তা বেসরকারিভাবে পরিচালিত হবে। ফলে কর্মীদের বেতন ও আমানতকারীদের মুনাফা বাজারভিত্তিক নির্ধারিত হবে এবং পাঁচ ব্যাংকের কোনো কর্মী চাকরি হারাবেন না।
রোববার সংবাদ সম্মেলনে ইউনিয়ন ব্যাংকের গ্রাহক আলিফ রেজা বলেন, আমরা টাকা তুলতে পারছি না, এমনকি অ্যাকাউন্ট থেকে অন্য অ্যাকাউন্টে স্থানান্তরও করতে পারছি না। পরিবার-পরিজনের চিকিৎসা, সন্তানের বেতন ও ব্যবসায়িক ব্যয় সবই স্থবির হয়ে গেছে। তাই যত দ্রুত সম্ভব লেনদেন স্বাভাবিক করে আমাদের কষ্টের টাকা ফেরত দিন।
এক্সিম ব্যাংকের সাভার শাখার গ্রাহক মেরিনা হক বলেন, গভর্নর বলেছিলেন- আগামী সপ্তাহ থেকে লেনদেন স্বাভাবিক হবে। কিন্তু সপ্তাহ পার হয়ে গেলেও আজ গুলশান শাখায় টাকা তুলতে পারিনি। ম্যানেজার জানিয়েছেন- নির্দেশনা না আসা পর্যন্ত টাকা দেওয়া যাবে না। তাহলে আমরা আর কতদিন অপেক্ষা করবো?
ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামি ব্যাংকের গ্রাহক মো. পলাশ লিখিত বক্তব্যে বলেন, এক্সিম, এসআইবিএল, এফএসআইবি, ইউনিয়ন ও গ্লোবাল ইসলামি- এই পাঁচ ব্যাংকের গ্রাহকরা এখনো নিজেদের আমানত ফেরত পাওয়ার নিশ্চয়তা পাননি।
তিনি জানান, গত ২৮ নভেম্বর মানববন্ধনে তারা ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত আলটিমেটাম দিয়েছিলেন। গভর্নরের আশ্বাসে তারা বাংলাদেশ ব্যাংক ঘেরাও কর্মসূচি এক সপ্তাহের জন্য স্থগিত রেখেছেন। তবে ২ লাখ টাকার বেশি আমানতের নিরাপত্তা এবং এফডিআর, ডিপিএস, সঞ্চয়পত্রের বিষয়ে এখনো কোনো স্পষ্ট নির্দেশনা না পাওয়ায় উদ্বেগ রয়ে গেছে। এসব বিষয়ে সুনির্দিষ্ট ঘোষণা না এলে আগামী ১৪ ডিসেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে গ্রাহকদের মূল দাবি ছিল গেজেটের মাধ্যমে সব ধরনের আমানতের (সঞ্চয়ী, চলতি হিসাব, এফডিআর, ডিপিএস) শতভাগ নিরাপত্তা ও মুনাফাসহ ফেরতের নিশ্চয়তা। টাকা ফেরত দেওয়ার সময়, ধরন ও ধাপসমূহ উল্লেখ করে একটি সুস্পষ্ট ‘রোডম্যাপ’ দ্রুত প্রকাশেরও দাবি জানান তারা।
এছাড়া, গ্রাহকের আস্থা ফিরিয়ে আনতে ব্যাংকের সব লেনদেন সম্পূর্ণ স্বাভাবিক করার দাবি জানানো হয়। সীমিত লিমিট রেখে অনলাইন লেনদেন অবিলম্বে চালু এবং ৬৫ বছর ঊর্ধ্ব বয়স্ক ও ক্যানসার রোগী গ্রাহকদের পুরো টাকা তাৎক্ষণিক ফেরত দেওয়ার নীতিমালা করার আহ্বান জানান গ্রাহকরা। এসময় তারা আগামী ১১ ডিসেম্বরের মধ্যে ব্যাংকের পূর্ণাঙ্গ স্বাভাবিক কার্যক্রম চালু করার দাবি জানান।
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত 2019 - 2025 PassengerVoice | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ
Developed By Muktodhara Technology Limited.
পাবলিক মতামত