শিরোনাম
Passenger Voice | ০৪:০৬ পিএম, ২০২৫-১২-০৭
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া উড়োজাহাজে দীর্ঘ পথ ভ্রমণে সক্ষম না হওয়ায় চিকিৎসার জন্য তাঁর লন্ডনযাত্রা বিলম্বিত হচ্ছে বলে জানিয়েছে চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ড। গতকাল শনিবার বিকেলে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালের সামনে সাংবাদিকদের কাছে এ কথা জানান মেডিকেল বোর্ডের সদস্য এ জেড এম জাহিদ হোসেন। উন্নত চিকিৎসার জন্য গত শুক্রবারই খালেদা জিয়াকে নিয়ে চিকিৎসকদের লন্ডনে রওনা হওয়ার কথা থাকলেও পরে তা বাতিল ঘোষণা করা হয়। আজ রোববার যাত্রা করার কথা থাকলেও তা হচ্ছে না।
এদিকে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এনামুল হক চৌধুরী বলেছেন, এয়ার অ্যাম্বুলেন্সবিষয়ক প্রস্তুতি সম্পন্ন। মেডিকেল বোর্ড পরামর্শ দিলেই ঢাকায় চলে আসবে কাতারের আমিরের ব্যবস্থা করা অ্যাম্বুলেন্সটি।
গত ২৩ নভেম্বর থেকে এভারকেয়ার হাসপাতালে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় চিকিৎসাধীন আছেন ৮০ বছর বয়সী খালেদা জিয়া। লিভার, কিডনি, ফুসফুস ও হৃদ্রোগের জটিলতায় তাঁর অবস্থা এখন সংকটাপন্ন। অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞদের নিয়ে গঠিত মেডিকেল বোর্ডের তত্ত্বাবধানে তাঁর চিকিৎসা চলছে। খালেদা জিয়ার বড় পুত্রবধূ মেডিকেল বোর্ডের সদস্য জুবাইদা রহমান যুক্তরাজ্য থেকে শুক্রবার ঢাকায় এসে চিকিৎসাপ্রক্রিয়ায় যুক্ত হয়েছেন। লন্ডনে থাকতেও চিকিৎসা কার্যক্রমে ভূমিকা রেখে আসছিলেন জুবাইদা রহমান।
সার্বিকভাবে খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা আগের মতোই রয়েছে। তাঁকে ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
বিএনপির চেয়ারপারসনকে চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে নিতে সব ধরনের প্রস্তুতি থাকলেও বিষয়টি মূলত তাঁর শারীরিক অবস্থার ওপর নির্ভর করছে বলে জানান তাঁর ব্যক্তিগত চিকিৎসক জাহিদ হোসেন। তিনি বলেন, ‘এয়ার অ্যাম্বুলেন্স সব সময় প্রস্তুত আছে। তবে চিকিৎসাগত দিক থেকে উনার নিরাপত্তা এবং সুরক্ষা প্রাধান্য পাচ্ছে। মেডিকেল বোর্ডের চিকিৎসকেরাও উনার শারীরিক অবস্থার দিকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন।’
খালেদা জিয়ার বিদেশে যাওয়া বিলম্বিত হওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করে জাহিদ হোসেন বলেন, ‘(কাতারের আমিরের) এয়ার অ্যাম্বুলেন্সের যান্ত্রিক ত্রুটি যেমন ছিল, একইভাবে মেডিকেল বোর্ডও সভা করে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, ওই মুহূর্তে উনার ফ্লাই করা সঠিক হবে না। ভবিষ্যতে হয়তো শারীরিক অবস্থাই বলে দেবে, উনাকে কখন বিদেশে নিয়ে যাওয়া যাবে।’
জাহিদ হোসেন বলেন, ‘যেহেতু উনার স্বাস্থ্য আমাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার, সেহেতু বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান তদারকির পাশাপাশি চিকিৎসকদের মতামতকে অগ্রাধিকার দিচ্ছেন। দলও বিষয়টিতে অগ্রাধিকার দিচ্ছে।’
খালেদা জিয়ার চিকিৎসা, তাঁকে দেশের বাইরে নেওয়ার বিষয়ে বিভ্রান্ত না হওয়া, গুজবে কান না দেওয়া এবং গুজব না ছড়ানোর আহ্বান জানিয়ে জাহিদ হোসেন বলেন, ‘১২ থেকে ১৪ ঘণ্টা যখন বিমানে ফ্লাই করবেন, তখন মানুষের শারীরিক যে পরিবর্তন হয়, তার সঙ্গে খাপ খাওয়ানো একজন অসুস্থ মানুষের পক্ষে সব সময় সম্ভব হয় না। বিষয়টি খেয়াল রেখে আপনারা দয়া করে বিভ্রান্ত হবেন না, দয়া করে কেউ বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করবেন না।’
খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠাতে কাতার সরকার এবং অন্তর্বর্তী সরকার সর্বোচ্চ পর্যায়ে সহযোগিতা করছে বলেও জানান খালেদা জিয়ার চিকিৎসক।
এদিকে বার্তা সংস্থা বাসস জানিয়েছে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ড সবুজসংকেত দিলেই ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেবে কাতারের ব্যবস্থা করা এয়ার অ্যাম্বুলেন্স। বাসস জানায়, বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এনামুল হক চৌধুরী এ তথ্য জানিয়েছেন। দলের পক্ষ থেকে তিনিই কাতার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে এ বিষয়ে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রক্ষা করছেন।
এনামুল হক চৌধুরী বলেন, মেডিকেল বোর্ড যখনই সিদ্ধান্ত জানাবে, তখনই এয়ার অ্যাম্বুলেন্স ঢাকার উদ্দেশে রওনা হবে এবং খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডনে নিয়ে যাবে। সবকিছুই কাতার কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনায় হচ্ছে।
বিকল্প এয়ার অ্যাম্বুলেন্স আনার বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে এনামুল হক বলেন, ‘আমরা নই, কাতার কর্তৃপক্ষই জার্মানি থেকে একটি অত্যাধুনিক এয়ার অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করে দিচ্ছে।’
মেডিকেল বোর্ডের কয়েকজন সদস্য বাসসকে জানিয়েছেন, গত দুদিনে বোর্ড কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছে। সেগুলোর প্রতিবেদন পর্যালোচনা করা হচ্ছে। শুক্রবার দুই দফা মেডিকেল বোর্ডের বৈঠক হয়। প্রতিদিনই খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার নিয়মিত প্রতিবেদনগুলো পর্যালোচনা করা হচ্ছে।
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত 2019 - 2025 PassengerVoice | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ
Developed By Muktodhara Technology Limited.
পাবলিক মতামত