বিদ্যুৎ বিভ্রাটে সার্ভার ডাউন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের চেক নিষ্পত্তিতে বিঘ্ন

Passenger Voice    |    ০২:২৪ পিএম, ২০২৫-১২-০৫


বিদ্যুৎ বিভ্রাটে সার্ভার ডাউন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের চেক নিষ্পত্তিতে বিঘ্ন

বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্ভার ডাউন হওয়ায় বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) দুপুর ৩টা থেকে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো ক্লিয়ারিং সিস্টেমের মাধ্যমে কোনো ধরনের লেনদেন করতে পারেনি। বিদ্যুৎ বিভ্রাট ও যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে এ সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

সার্ভার জটিলতা নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে পাঠানো এক বার্তায় বলা হয়েছে, 'অনিবার্য কারিগরি ত্রুটির পরিপ্রেক্ষিতে ৪ ডিসেম্বর তারিখের বাংলাদেশ অটোমেটেড চেক প্রসেসিং সিস্টেমের (বিএসিপিএস) হাই ভ্যালু চেক [পাঁচ লাখ টাকার বেশি] এবং রেগুলার ভ্যালু চেক [পাঁচ লাখ টাকার কম] নিষ্পত্তি করা যাচ্ছে না। বিধায় আজকের বিএসিপিএস-এর সকল লেনদেন পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হলো। বিইএফটিএন-এর সেশন-১ এবং সেশন-২ নিষ্পত্তি রিপোর্ট পরবর্তীতে প্রদান করা হবে।'

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক আরিফ হোসেন খান বলেছিলেন, 'ন্যাশনাল পেমেন্ট সুইচ বাংলাদেশ (এনপিএসবি) চালু রয়েছে, এর মাধ্যমে লেনদেন করা যাবে। বিদ্যুৎ ত্রুটির কারণে বৃহস্পতিবার থেকে এ সমস্যা হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে, রিয়েল টাইম গ্রস সেটেলমেন্ট (আরটিজিএস) ও অন্যান্য পদ্ধতিতে যেসব সমস্যা হচ্ছে, তা দ্রুত সমাধান করা হবে।'

বাংলাদেশ ব্যাংকের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংকে বিদ্যুৎ ত্রুটির কারণে এ জটিলতা তৈরি হয়। দুপুর নাগাদ বেশ কয়েকবার বিদ্যুৎ চলে যায়। বিদ্যুৎ চলে গেলে ইউপিএস ১০ মিনিটের মতো ব্যাকআপ দেয়। এরপর জেনারেটরে চলার কথা থাকলেও জেনারেটর চালু হয়নি। ফলে পুরো সিস্টেম ডাউন হয়ে যায় এবং ডাটা সেন্টারের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়।

তিনি বলেছিলেন, 'সিস্টেম ঠিক করার প্রক্রিয়া চলছে। এনপিএসবি চালু করা হয়েছে। তবে চেক ক্লিয়ারিং আজকের (বৃহস্পতিবার) জন্য বাতিল (অ্যাবানডন্ড) করা হয়েছে।'

বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর সিআরআর [ক্যাশ রিজার্ভ রেশিও] ঘাটতির শঙ্কা প্রসঙ্গে ওই কর্মকর্তা বলেন, 'হাউজ অ্যাবানডন্ড করা হয়েছে। সুতরাং আজকের লেনদেন শুক্রবার হিসাব করা হবে।'

বাণিজ্যিক ব্যাংকের ভোগান্তি

একটি বেসরকারি ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্ভার ডাউন ছিল। আরটিজিএস ও বিএফটিএনের [বাংলাদেশ ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার নেটওয়ার্ক] মতো ক্লিয়ারিং সিস্টেম কাজ করেনি। ফলে ব্যাংকের চলতি হিসাবের স্থিতি কী দাঁড়িয়েছে, তা তারা জানতে পারেননি।

তিনি বলেন, 'বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে আমাদের শুক্রবার অফিসে যেতে বলা হয়েছে। আশা করছি কাল (শুক্রবার) এর সমাধান হতে পারে।'

আরেক বেসরকারি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) বলেন, 'আমরা বৃহস্পতিবার রেপো করেছিলাম, কিন্তু সার্ভার ডাউন থাকায় সেটার টাকা এখনো পাইনি। ব্যাংকের কারেন্ট অ্যাকাউন্ট কত, সেটা আমরা দেখতে পাচ্ছি না। কোনো টাকা আসেওনি, আবার কোনো টাকা যায়ওনি।'

অন্য একটি ব্যাংকের এমডি বলেন, 'বৃহস্পতিবার কোনো ধরনের লেনদেন হয়নি, কারণ সিস্টেম ডাউন ছিল। কেন্দ্রীয় ব্যাংক নোটিফিকেশন দিয়ে জানিয়েছে, বৃহস্পতিবারের সব লেনদেন শুক্রবার সকালে সম্পন্ন হবে। যেহেতু শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটির দিন হলেও কাজ চলবে, তাই বড় কোনো সমস্যা হবে না বলে আশা করছি।'