শিরোনাম
Passenger Voice | ০২:১৫ পিএম, ২০২৫-১১-২৭
ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক দুজনই নতুন দায়িত্ব নিয়েছেন। এরই মধ্যে দুজনের মধ্যে দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয়েছে। মূলত ইসলামী ব্যাংকের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এএমডি) ড. কামাল উদ্দীন জসীমের নিয়োগকে কেন্দ্র করে এই দ্বন্দ্ব তৈরি হয়। গত ১ সেপ্টেম্বর ইসলামী ব্যাংকের এএমডি হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন ড. কামাল উদ্দীন জসীম। কামাল উদ্দীন জসীম উপব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি) হয়েছেন এক বছরও হয়নি। জ্যেষ্ঠতার দিক থেকে অন্তত তিনজন ডিএমডিকে টপকে তাকে এএমডি করা হয়। ব্যাংকের এমডিকে অন্ধকারে রেখে চেয়ারম্যানের একক সিদ্ধান্তেই এই নিয়োগ কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। ইসলামী ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানায়, গত ৩১ আগস্ট ইসলামী ব্যাংকের ৩৭২তম পর্ষদ সভায় এএমডির নিয়োগসংক্রান্ত মেমো (স্মারক) হুট করে আনতে বলেন চেয়ারম্যান অধ্যাপক এম জোবায়দুর রহমান। চেয়ারম্যানের একক ইচ্ছায় কোনো প্রতিযোগিতা ছাড়াই নিয়োগ পেয়ে যান তিনি।
অথচ ওই ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের (এমডি) দায়িত্বে থাকা ওমর ফারুক খানকে এই নিয়োগের বিষয়ে আগে থেকে কিছুই জানানো হয়নি। হুট করে চেয়ারম্যান এমডিকে বলে বসেন, ‘এএমডি নিয়োগের মেমোটা (স্মারক) নিয়ে আসেন।’
‘এ ধরনের কোনো মেমো পর্ষদে উপস্থাপন করা হচ্ছে না’- এমন তথ্য এমডি জানালে চেয়ারম্যান বলেন, ‘৭৩৮ নম্বর মেমোটা দেখুন।’
সূত্র জানায়, হুট করে আলোচনা ওঠায় পর্ষদের সদস্যরা এএমডি নিয়োগের বিষয়ে পর্যালোচনা করার জন্য পর্যাপ্ত সময় পাননি। ফলে দ্রুত সময়ের মধ্যে এএমডি নিয়োগ দেওয়ার প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হয়। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ইসলামী ব্যাংকের একজন পরিচালক বলেন, ‘কামাল উদ্দীন জসীমকে যোগ্য মনে হয়েছে। এ কারণে তাকে এএমডি নিয়োগ দেওয়ার বিষয়ে সবাই সম্মতি জানিয়েছেন।’
যদিও এমডিকে অন্ধকারে রেখে চেয়ারম্যানের একক সিদ্ধান্তে এমন নিয়োগের বিষয়ে সমালোচনা করেন অন্য পরিচালকরা। তারা বলছেন, মেমো প্রস্তুত করে বোর্ডে উত্থাপন করার দায়িত্ব এমডির। তিনি জানতেন না এই মেমোর কথা। এটা মোটেও ঠিক হয়নি।
অভিযোগ রয়েছে, চেয়ারম্যানের আশীর্বাদ পাওয়ায় এমডির নির্দেশও মানেন না এএমডি কামাল উদ্দীন জসীম। আর এভাবে এমডির নির্দেশ উপেক্ষা করার জন্য চেয়ারম্যান কৌশলে মানবসম্পদ বিভাগের দায়িত্ব দিয়েছেন জসীমকে। ফলে কোনো কর্মী অন্যায় করলেও তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারেন না এমডি ওমর ফারুক খান। এ ক্ষেত্রে এমডি যখন এএমডিকে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নির্দেশ দেন, তখন এএমডি তা অমান্য করেন। ফলে এ নিয়ে ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের মধ্যে টানাপোড়েন শুরু হয়েছে।
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে সরকার পতনের পর ব্যাংকটি সংস্কারের অংশ হিসেবে পর্ষদ পুনর্গঠন করে বাংলাদেশ ব্যাংক। পুনর্গঠিত পর্ষদের চেয়ারম্যান করা হয় সোনালী ও রূপালী ব্যাংকের সাবেক এমডি মো. ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদকে। কিন্তু পাল্টাপাল্টি অভিযোগ এবং একটি বিশেষ গোষ্ঠীর চাপের কারণে এক বছরের মাথায় তিনি বাধ্য হয়ে পদত্যাগ করেন। বাংলাদেশ ব্যাংক ও দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তাকে নিয়ে তদন্ত করছে। সম্প্রতি তাকে গ্রেপ্তারও করা হয়।
এরপর গত ২৫ জুলাই ব্যাংকটির স্বতন্ত্র পরিচালক জোবায়দুর রহমানকে চেয়ারম্যান নির্বাচিত করা হয়। অভিযোগ রয়েছে, চেয়ারম্যান হয়েই ব্যাংকটিতে নিজস্ব বলয় তৈরি করতে চেষ্টা করেন তিনি। ইসলামী ব্যাংকের পর্ষদে আরও দুজন পরিচালককে নিয়ে এই বলয় তৈরি করেছেন তিনি। ফলে ওই দুই পরিচালকের সমর্থন পাওয়ায় পর্ষদে যেকোনো সিদ্ধান্ত অনুমোদন করতে পারছেন চেয়ারম্যান।
এ বিষয়ে চেয়ারম্যানের বক্তব্য জানতে তার সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। এদিকে, গত ৩ আগস্ট ইসলামী ব্যাংকের নতুন এমডির দায়িত্ব পান মো. ওমর ফারুক খান। এ বিষয়ে তার বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি ব্যস্ত থাকায় কথা বলতে রাজি হননি।
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত 2019 - 2025 PassengerVoice | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ
Developed By Muktodhara Technology Limited.
পাবলিক মতামত