বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরতে গিয়ে ১৩ জেলেসহ ফিসিংবোট নিখোঁজ

Passenger Voice    |    ০৩:৫৯ পিএম, ২০২৫-১১-২৩


বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরতে গিয়ে ১৩ জেলেসহ ফিসিংবোট নিখোঁজ

বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরতে গিয়ে ১৩ জন জেলেসহ ভোলার লালমোহন উপজেলার একটি মাছ ধরার ফিশিংবোট গত ১২ দিন ধরে নিখোঁজ রয়েছে। এতে নিখোঁজ জেলেদের পরিবারে দেখা দিয়েছে চরম উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠা। 

নিখোঁজ জেলেরা হলেন- আছমত মাঝির ছেলে ট্রলার মালিক ফারুক (৫৩), আব্দুল মালেকের ছেলে জাহাঙ্গীর (৩৮), নুরুল ইসলামের ছেলে শামিম (২৩), হানিফের ছেলে খোকন (৩৫), সবুজের ছেলে সজিব (২২), আছমত আলীর ছেলে আলম (৪৬), মফিজুল হকের ছেলে হেলাল উদ্দিন (৪০), জয়নাল আবেদীন মোল্লার ছেলে ফারুক (৪২), আবুল কাশেমের ছেলে মাকসুদুর রহমান (৪২), ভুট্রুর ছেলে ছাব্বির (২৫) ও নাছির, আব্দুল মালেক, মাকসুদ। তারা সবাই লালমোহন উপজেলার ধলী গৌরনগর ইউনিয়নের ৮ ও ৯নং ওয়ার্ডের প্যায়ারী মোহন এবং কুলছড়া গ্রামের বাসিন্দা বলে জানা গেছে।

নিখোঁজ জেলেদের মধ্যে কয়েকজনের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত সোমবার ১০ নভেম্বর দুপুরে স্থানীয় মাস্টার বাজার এলাকার মেঘনা নদী হয়ে ৫ দিনের প্রয়োজনীয় বাজার সদাইসহ ট্রলার মালিক মো. ফারুক মাঝির নেতৃত্বে ১৩ জন জেলেসহ মা-বাবার দোয়া নামের ফিশিংবোটটি বঙ্গোপসাগরের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে চরফ্যাশনের সামরাজ ঘাটে গিয়ে থামেন, সেখান থেকে ট্রলারে বরফ নিয়ে ফের সাগরের উদ্দেশ্যে তারা রওনা হন। পরের দিন থেকে পুরোপুরি যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে ট্রলারটি।

ট্রলার মালিক ফারুকের ছেলে মো. শাহীন  বলেন, আমাদের ফিশিংবোটে জিপিএস ছিল না। ৫ দিনের বাজার ও প্রয়োজনীয় সামগ্রী নিয়ে ১৩ জন জেলেসহ ১০ নভেম্বর আমাদের বোট সাগরে গিয়েছিল। ৫-৬ দিনের মাথায় সাধারণত তারা তীরে ফিরে আসেন। কিন্তু ১০ নভেম্বর তারা সাগরের উদ্দেশ্যে যাত্রার পর ১১ নভেম্বর থেকে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। গত ১৩ দিন হয়ে গেল, অথচ তাদের কোনো খোঁজ পাচ্ছি না। তাদের সঙ্গে থাকা মোবাইলও বন্ধ। আমরা সবাই চিন্তায় আছি, জানি না তাদের ভাগ্যে কী ঘটেছে। আমি চাই আমার বাবাসহ ট্রলারের সব জেলের সন্ধানে প্রশাসন এগিয়ে আসুক, তাদের ফেরত চাই।

নিখোঁজ জেলদের সন্ধানে এবং উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনার বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন বলেন, এসব আমাদের কাজ না। এটি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও স্থানীয় প্রশাসনের কাজ। লালমোহন থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মাসুদ হাওলাদার বলেন, নিখোঁজ জেলেদের খোঁজে গতকাল একটি বোট সাগরে গিয়েছে, এখনও কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি, সে বোটটিও ফেরেনি।

উদ্বেগ প্রকাশ করে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র মৎস্যজীবী জেলে সমিতির ভোলা জেলার সাধারণ সম্পাদক মো. এরশাদ বলেন, আমাদের ১৩ জন জেলে বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরতে গিয়ে ডুবে মারা গেল কিনা সেটার খোঁজ পাচ্ছি না। তাদের খোঁজে উদ্ধার অভিযান চালানোর জন্য কোস্টগার্ড ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে জোরালো দাবি জানান তিনি। এদিকে সংশ্লিষ্টদের ধারণা, ফিশিংবোটটি দিক হারিয়ে পার্শ্ববর্তী দেশের জলসীমায় প্রবেশ করায় তাদের আটক হয়েছে।