শিরোনাম
Passenger Voice | ০৫:২২ পিএম, ২০২৫-১১-১৫
কক্সবাজারের পর্যটন সম্ভাবনাময় দ্বীপ মহেশখালীর দক্ষিণাংশের প্রবেশদ্বার গোরকঘাটায় প্রায় ৩৭ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিতব্য নতুন জেটির কাজ ৮০ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে। এটি নির্মাণ সম্পন্ন হলে জেলা সদরের সাথে যাতায়াতে সুফল ভোগ করবে দ্বীপটির সাড়ে চার লাখ জনগণসহ বিপুল পরিমাণ দেশি–বিদেশি পর্যটক। চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যেই জেটিটির নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হবে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর মহেশখালী।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানান, ৩৬ কোটি ৭৮ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন মহেশখালী জেটির দৈর্ঘ্য ৭০০ মিটার ও প্রস্থ ৭ দশমিক ৩ মিটার। ৭০০ মিটারের জেটির মধ্যে ৩০০ মিটার সংযোগ সড়ক নির্মাণ করা হবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)। কক্সবাজার জেলা সদরের সাথে মহেশখালীর যোগাযোগের দীর্ঘ ৮ কিলোমিটারের ‘কক্সবাজার–মহেশখালী নৌরুটে যাতায়াতে দীর্ঘদিন ধরে ভোগান্তিতে ছিল মহেশখালী দ্বীপের জনগণ। সুদীর্ঘ কাল থেকে কাঠের বোট, ছোট ইঞ্জিন নৌকা ও সাম্পান দ্বারা শত শত যাত্রী উত্তাল সাগর পাড়ি দিয়ে যাতায়াত করে আসছিল। গত এক যুগ পূর্ব থেকে এখানে স্পিডবোট দ্বারা যাত্রী পারাপার করে আসছে। চলতি বছরের ২৪ এপ্রিল থেকে এই ঘাটে যুক্ত হয়েছে বিআইডব্লিউটিএ এর গণপরিবহন আধুনিক সি–ট্রাক। এই সি–ট্রাক প্রতিদিন কক্সবাজার–মহেশখালী উভয় ঘাট থেকে চার ট্রিপ করে মোট ৮ ট্রিপ যাত্রী পারাপার করছে। এছাড়া দেড় শতাধিক স্পিডবোটসহ নৌযানগুলো প্রতিদিন অন্তত ১০/১৫ হাজার যাত্রী পারাপারে ব্যবহৃত হয় এই জেটি। কিন্তু দ্বীপটিতে দীর্ঘ ২৭ বছর পূর্বে নির্মিত জেটি জরাজীর্ণ অবস্থায় পতিত হওয়ায় যাতায়াতের সময় যাত্রীদেরকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। বিশেষত, বর্ষাকাল ও দুর্যোগপূর্ণ আওহাওয়ায় সাগর উত্তাল থাকলে এ নৌপথ দিয়ে পারাপারের সময় মানুষের ভোগান্তি আরও বেড়ে যায়। এছাড়া অসুস্থ রোগী নিয়ে ও জরুরি পরিস্থিতিতে এই জলপথে তাদের দুর্ভোগ পোহাতে হয়। এমন পরিস্থিতিতে আধুনিক সুযোগ–সুবিধা সম্বলিত নির্মাণাধীন নতুন জেটি মহেশখালীবাসীকে দেখাচ্ছে আশার আলো। পর্যটকবান্ধব এই জেটির নির্মাণ কাজ শেষ হলে মহেশখালী দ্বীপে মানুষের যাতায়াত সুবিধা বৃদ্ধি পাবে, সম্প্রসারিত হবে পর্যটন শিল্প।
এলজিইডি সূত্র জানায়, আধুনিক সুযোগ–সুবিধা ও পর্যটকদের কথা মাথায় রেখে মহেশখালীর গোরকঘাটা ঘাটে আধুনিক মানের একটি জেটি নির্মাণ করা হচ্ছে। এ জেটিতে থাকবে দুই লেইনের যান চলাচল সড়ক, বিশ্রামাগার, প্রার্থনা ও প্রতিবন্ধীদের জন্য জায়গা এবং টয়লেটসহ বিনোদনের ব্যবস্থা।
মহেশখালী স্পিডবোট মালিক সমিতির সভাপতি আতা উল্লাহ বোখারী বলেন, গত কয়েকবছর ধরে মহেশখালীতে দেশি–বিদেশি পর্যটকের সংখ্যা বেড়েছে। প্রতিদিন অন্তত ১০ হাজার মানুষ এ জেটি দিয়ে যাতায়াত করেন। এদের মধ্যে গড়ে পাঁচ শতাধিক পর্যটক থাকেন। জেটি এলাকা ভরাট হয়ে যাওয়ায় যাত্রীরা ভোগান্তিতে পড়ছেন। নির্মাণাধীন জেটির কাজ শেষ হলে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি কেটে যাবে বলে উল্লেখ করেন তিনি। ইতিমধ্যে নতুন সংযোজিত সি–ট্রাকের সুফল ভোগ করছে দ্বীপের জনগণ।
মহেশখালী পৌরসভার তথ্যমতে, গোরকঘাটার পূর্বপাশে ১৯৯৮ সালে প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ টাকা ব্যয়ে ৪০০ মিটার দীর্ঘ একটি জেটি নির্মাণ করা হয়। নির্মাণের ২৭ বছরেও জেটিতে বড় ধরনের কোনো সংস্কার কাজ হয়নি। তবে মহেশখালী পৌরসভা ইতিপূর্বে কয়েকবার সংস্কার কাজ করেন।
মহেশখালী উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. জয়নাল আবেদীন বলেন, বর্তমানে জেটির বিভিন্ন অংশে বড় বড় ফাটলের সৃষ্টি হয়েছে। ভেঙে গেছে দুই পাশের রেলিং। ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় জেটির ওপর দিয়ে ভারি যান চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। এ কারণে নতুন করে আরেকটি জেটি নির্মাণ করা হচ্ছে।
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত 2019 - 2025 PassengerVoice | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ
Developed By Muktodhara Technology Limited.
পাবলিক মতামত