হিলি বন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ, দাম ঊর্ধ্বমুখী

Passenger Voice    |    ০৩:২২ পিএম, ২০২৫-১১-০৬


হিলি বন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ, দাম ঊর্ধ্বমুখী

দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে চলতি বছরের আগস্ট মাস থেকে ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ রয়েছে। এর ফলে দেশের বাজার এখন পুরোপুরি দেশি পেঁয়াজের ওপর নির্ভরশীল। সরবরাহ কমে যাওয়ায় পাইকারি ও খুচরা- দুই বাজারেই পেঁয়াজের দাম হঠাৎ বেড়েছে। এতে সাধারণ ক্রেতারা বিপাকে পড়েছেন, আর বিক্রেতারাও ক্ষতির আশঙ্কায় আছেন।

বর্তমানে হিলি স্থলবন্দরের পাইকারি বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৮৫ টাকায়। খুচরা বাজারে দাম পৌঁছেছে ৯০ থেকে ১০০ টাকায়। মাত্র তিন দিনের ব্যবধানে কেজিপ্রতি ২০ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে নিত্যপ্রয়োজনীয় এ পণ্যের দাম।

তিন দিন আগে পর্যন্ত হিলির পাইকারি বাজারে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছিল ৬৫ থেকে ৭০ টাকায়। আজ (গতকাল) সেই একই বাজারে কেজিপ্রতি দাম দাঁড়িয়েছে ৮৫ থেকে ৯০ টাকায়। দিনাজপুরসহ অন্যান্য জেলায় খুচরা বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১২০ টাকায়।

দিনাজপুরের বাহাদুর বাজারের পেঁয়াজ ব্যবসায়ী শম্ভু কুমার রায় বলেন, ‘দেশি বাজারে সরবরাহ কমে যাওয়ায় দাম বেড়েছে। চাহিদা বেশি, কিন্তু সরবরাহ কম। ফলে পাইকাররা বাধ্য হয়েই বেশি দামে কিনছেন।’

হিলির পাইকারি বিক্রেতা রুবেল হোসেন বলেন, ‘আমরা মূলত নওগাঁ, পাবনা ও নাটোর থেকে পেঁয়াজ সংগ্রহ করি। এই মুহূর্তে কৃষক নতুন মৌসুমের বীজ বপনে ব্যস্ত, তাই বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ কম। সরবরাহ কমে গেলে স্বাভাবিকভাবেই দাম বাড়ে।’

আরেক বিক্রেতা রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘মাত্র কয়েক দিনের মধ্যে পেঁয়াজের দাম কেজিতে ২০ থেকে ৩০ টাকা বেড়েছে। এতে ক্রেতারা কম কিনছেন, ফলে বিক্রি কমে গেছে। আমাদের মতো বিক্রেতারাও সমস্যায় পড়ছি।’

খুচরা বিক্রেতা সাদ্দাম হোসেন বলেন, ‘আমরা পাইকারি বাজার থেকেই বেশি দামে পেঁয়াজ কিনে আনছি। খুচরা বাজারে দাম বাড়াতে হচ্ছে, না হলে ক্ষতি গুনতে হয়। দাম বাড়লে ক্রেতারা কিনছেন না, ফলে লাভ তো দূরের কথা, ক্ষতির মুখে পড়ছি।’

দিনাজপুর শহরের গৃহিণী সুমি আক্তার বলেন, ‘প্রতিদিনের রান্নায় পেঁয়াজ ছাড়া উপায় নেই। এখন এক কেজি পেঁয়াজ কিনতেই শত টাকা লেগে যাচ্ছে। দাম এভাবে বাড়তে থাকলে মাসের বাজার করা অসম্ভব হয়ে পড়বে।’ ক্রেতা মমিনুল ইসলাম বলেন, ‘আগে ৬০ টাকায় কেজি পেঁয়াজ কিনতাম, এখন দিতে হচ্ছে ৯০ থেকে ১০০ টাকা। বেতন তো আগের মতোই, কিন্তু বাজারদর প্রতিদিন বাড়ছে। রান্নাঘরের খরচ সামলানো কঠিন হয়েছে।’ আরেক ক্রেতা মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘সরকার যদি দ্রুত আমদানির ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে সাধারণ মানুষের কষ্ট আরও বাড়বে। পেঁয়াজের মতো প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বাড়লে অন্য সব বাজারেও প্রভাব পড়ে।’

হিলি স্থলবন্দরের রাজস্ব কর্মকর্তা এম আর জামান বাঁধন বলেন, ‘চলতি বছরের আগস্ট থেকে ভারতের পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ রয়েছে। সরকার যদি নতুন করে আমদানির অনুমতি দেয়, তবে ব্যবসায়ীরা হিলি স্থলবন্দর দিয়ে পুনরায় পেঁয়াজ আমদানি করতে পারবেন।’


প্যা.ভ.ম