শিরোনাম
Passenger Voice | ০৩:৩৮ পিএম, ২০২৫-১১-০২
বঙ্গোপসাগরের প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনে ভ্রমণে যেতে অনীহা দেখা দিয়েছে পর্যটকদের মাঝে। ফলে যাত্রী না থাকায় রবিবার (২ অক্টোবর) দ্বিতীয় দিনেও কক্সবাজারের নুনিয়ারছড়ার বিআইডব্লিউটিএ ঘাট থেকে কোনও জাহাজ সেন্টমার্টিনের উদ্দেশ্যে ছাড়েনি। রাতযাপন বন্ধের কারণে ভরা মৌসুমেও পর্যটক না থাকায় দ্বীপবাসীর মধ্যে হতাশা বিরাজ করছে। তা ছাড়া দ্বীপের একমাত্র জেটি সংস্কারের কাজও থমকে আছে।
এ বিষয়ে সি ক্রুজ অপারেটর ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক হোসাইন ইসলাম বাহাদুর সাংবাদিকদের বলেন, ‘সেন্টমার্টিন যাওয়ার অনুমতি থাকলেও কোনও যাত্রী না পাওয়ায় আমরা আজও জাহাজ ছাড়িনি। কারণ কিছুসংখ্যক পর্যটক দিনে গিয়ে দিনে ফিরতে আগ্রহী। তবে তাদের সংখ্যা ১ থেকে দেড়শ। কিন্তু এই পরিমাণ যাত্রী নিয়ে জাহাজ চলাচল সম্ভব না।
‘একটি জাহাজ সাড়ে ৩শ যাত্রী না পেলে দ্বীপে আসা-যাওয়া করতে পারে না। তার কারণ জাহাজের খরচ। একটি জাহাজ আসা-যাওয়ার জন্য জ্বালানি, জাহাজের নাবিকসহ অন্যান্য কর্মচারী, ঘাটের টোল, সরকারি ভ্যাটসহ সব মিলে খরচ ১০ লাখ টাকার মতো। ফলে এক থেকে দেড় শত যাত্রী পেলেও কক্সবাজার শহর থেকে সেন্টমার্টিন আসা যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না। এমন পরিস্থিতিতে জাহাজ চলাচল বন্ধ রয়েছে।’
তথ্য অনুযায়ী, আগামী জানুয়ারি মাস পর্যন্ত সেন্টমার্টিন দ্বীপে যেতে পারবেন পর্যটকরা। আগামী বছরের ১ ফেব্রুয়ারি থেকে আবার ৯ মাসের জন্য দ্বীপে পর্যটক যাতায়াত সম্পূর্ণভাবে বন্ধ থাকবে। দ্বীপে ভ্রমণের সময়সূচি এবং পর্যটক উপস্থিতিও এবার কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রিত থাকবে। ফেব্রুয়ারি মাসে দ্বীপে পর্যটক যাতায়াত সম্পূর্ণভাবে বন্ধ থাকবে। প্রতিদিন গড়ে দুই হাজারের বেশি পর্যটক ভ্রমণ করতে পারবেন না।
জাহাজ মালিকরা জানান, রাতযাপনের অনুমতি নেই, একই দিনই ফিরতে হবে– পর্যটকদের এমন শর্ত জুড়ে কঠোর নির্দেশনা দিয়ে সরকার দীর্ঘ ৯ মাস পর ১ নভেম্বর থেকে পর্যটকদের জন্য সেন্টমার্টিন দ্বীপ উন্মুক্ত করেছে। এর অংশ হিসেবে শুরুতে প্রাথমিকভাবে নুনিয়ারছড়ার বিআইডব্লিউটিএ ঘাট থেকে প্রথম দিন ‘কর্ণফুলী এক্সপ্রেস’ ও ‘বারো আউলিয়া’ নামে দুটি জাহাজ সেন্টমার্টিন রুটে চলার কথা থাকলেও, মালিকরা এই সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছেন। কারণ দ্বীপে নভেম্বর থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত তিন মাস নির্দিষ্ট শর্তে পর্যটক যাওয়ার অনুমতি দিয়েছে সরকার। নভেম্বরে কেবল দিনের বেলায় ঘুরে ফিরে আসার নিয়মে অনেক ভ্রমণপিপাসুই সেন্টমার্টিন ভ্রমণ বাতিল করেছেন। ফলে পর্যাপ্ত যাত্রী না পাওয়ায় বাধ্য হয়ে নভেম্বরে জাহাজ চলাচল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন জাহাজ মালিকরা।
এ বিষয়ে সেন্টমার্টিন ইউনিয়নের (ভারপ্রাপ্ত) চেয়ারম্যান ফয়েজুল ইসলাম বলেন, ‘রাত্রীযাপন বন্ধের কারণে সেন্টমার্টিনে পর্যটকদের বেড়াতে আসতে অনীহা রয়েছে; যার কারণে আজও কোনও জাহাজ দ্বীপে আসেনি। এ ভরা মৌসুমেও পর্যটকশূন্য দ্বীপে। এখানকার মানুষের অধিকাংশ জীবনযাত্রা নির্ভর করে পর্যটন আয় থেকে। ফলে পর্যটন শিল্পের মন্দার কারণে দ্বীপের মানুষের মাঝে হাহাকার চলছে। তা ছাড়া কক্সবাজার থেকে ৭-৮ ঘন্টা সমুদ্র পাড়ি দিয়ে দ্বীপে এসে একই দিন ফিরে যাওয়া অসম্ভব। আর এত কড়াকড়ির করলে পর্যকরা প্রবাল দ্বীপ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে। এতে দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনের নাম পর্যটন খাত থেকে নাম মুছে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে। তা ছাড়া দ্বীপের একমাত্র চলাচলের মাধ্যম জেটিঘাটের সংস্কারের কাজও থমকে রয়েছে।’
প্যা/ভ/ম
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত 2019 - 2025 PassengerVoice | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ
Developed By Muktodhara Technology Limited.
পাবলিক মতামত