সাইবার হামলা প্রতিরোধে বেবিচকের নতুন উদ্যোগ

Passenger Voice    |    ০৪:৩৩ পিএম, ২০২৫-১০-১৩


সাইবার হামলা প্রতিরোধে বেবিচকের নতুন উদ্যোগ

সাইবার হামলার আশঙ্কায় দেশের সব বিমানবন্দরে জারি করা বিশেষ সতর্কতা এখনও বলবৎ রয়েছে। একইসঙ্গে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ নিজস্ব উদ্যোগে সাইবার হামলা প্রতিরোধে করণীয় সম্পর্কে কর্মীদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাও করেছে।

মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) থেকে এই প্রশিক্ষণ শুরু হতে যাচ্ছে। যা ঢাকায় বেবিচক সদর দফতরে প্রথম অবস্থায় শুরু হয়ে দেশের অন্য বিমানবন্দরগুলোতেও আয়োজন করা হবে।

এ বিষয়ে বেবিচকের মুখপাত্র কাওছার মাহমুদ বলেন, ‘বিশ্বের বিমানবন্দরগুলোতে সাইবার হামলার ঘটনা ঘটছে। এতে করে বিমান চলাচল মারাত্মক আকারে বিঘ্নিত হচ্ছে। মূলত এ কারণে আমরা আগে থেকেই সতর্কতা অবলম্বন করছি। গত ৮ অক্টোবর থেকে আমরা দেশের প্রতিটি বিমানবন্দরেই এই সতর্কতা অবলম্বন করছি।’

তিনি বলেন, ‘এখন পর্যন্ত আমাদের এ রকম কোনও ঘটনা ঘটেনি। তবে এটি প্রতিরোধে আমরা আমাদের পক্ষ থেকে যথেষ্ট নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিচ্ছি।’

এদিকে, সাইবার হামলা প্রতিরোধ বা সাইবার হামলা কীভাবে বোঝা যাবে এ সম্পর্কে কর্মীদের বিশেষ প্রশিক্ষণের আয়োজন করেছে বেবিচকের আইটি বিভাগ। মঙ্গলবার থেকে এই বিশেষ প্রশিক্ষণ বেবিচকের প্রধান কার্যালয় থেকে শুরু হচ্ছে। এটি পর্যায়ক্রমে দেশের সকল বিমানবন্দরে অনুষ্ঠিত হবে।

বেবিচকের সিনিয়র সিস্টেম অ্যানালাইসিস্ট খন্দকার আজিজুর রহমান বলেন, ‘আমরা প্রাথমিক অবস্থায় সদর দফতরের কর্মকর্তাদের এ বিষয়ে সচেতন করবো। এরপর পর্যায়ক্রমে সকল বিমানবন্দরের কর্মকর্তাদের এ বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।’

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘যেহেতু বিশ্বব্যাপী এই বিষয়টা উদ্বেগজনক হয়ে উঠছে আমরা আমাদের সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিয়ে রাখছি।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের নিজস্ব আইটি এক্সপার্টরাই এই প্রশিক্ষণ দেবে।’

প্রসঙ্গত, লন্ডনের হিথ্রো, ব্রাসেলস ও বার্লিন বিমানবন্দরে সাইবার হামলার পর বাংলাদেশের সব আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দরে সাইবার সুরক্ষায় নড়েচড়ে বসে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)। এর অংশ হিসেবে গত সপ্তাহে সতর্কতা জারি করেছে বেবিচক। সংস্থাটির ওয়েবসাইটে হামলার পরিপ্রেক্ষিতে বিমানবন্দরগুলোকে দেওয়া হয়েছে ১০টি বিশেষ নির্দেশনা। সম্প্রতি বিমানবন্দরের নিরাপত্তা নিয়ে বেবিচকের বোর্ডসভায় এ সিদ্ধান্ত হয়।

বেবিচকের সদস্য এয়ার কমোডোর আবু সাঈদ মেহবুব খান (পরিকল্পনা ও পরিচালনা) স্বাক্ষরিত চিঠিতে বিমানবন্দরগুলোকে দেওয়া ১০ নির্দেশনার মধ্যে রয়েছে- শক্তিশালী পাসওয়ার্ড ব্যবহার করা, বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে পাসওয়ার্ড পুনরায় ব্যবহার থেকে বিরত থাকা এবং পাসওয়ার্ড নিয়মিত পরিবর্তন করা; অপরিচিত বা সন্দেহজনক ইমেইল ও লিংকে ক্লিক করা থেকে বিরত থাকা; হোয়াটসঅ্যাপ, মেসেঞ্জারসহ অন্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অবাঞ্ছিত বা সন্দেহজনক লিংক কিংবা অ্যাটাচমেন্টে ক্লিক করা থেকে বিরত থাকা; সফটওয়্যার (সিকিউরিটি প্যাচ) ও অ্যান্টিভাইরাস নিয়মিত আপডেট রাখা; পাইরেটেড বা ক্র্যাকড সফটওয়্যার ব্যবহার না করা; অফিশিয়াল ডিভাইসে ব্যক্তিগত সফটওয়্যার বা অ্যাপস ইন্সটল না করা; মাল্টি-ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন (এমএফএ) ব্যবহার করা; দাফতরিক কাজে বেবিচকের ইমেইল অ্যাড্রেস ব্যবহার করা; গুরুত্বপূর্ণ তথ্য-উপাত্তের নিয়মিত ব্যাকআপ রাখা এবং পেনড্রাইভ স্ক্যান ব্যতিরেকে ব্যবহার না করা।

সাইবার হামলার বিষয়ে সতর্কতা অবলম্বন ও জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ প্রসঙ্গে ওই চিঠিতে বলা হয়, ‘সম্প্রতি বিশ্বের বেশকিছু বিমানবন্দরে সাইবার হামলা হয়েছে। বাংলাদেশে নিরবচ্ছিন্ন বিমান পরিবহন ব্যবস্থা নিশ্চিতের লক্ষ্যে সবাইকে সতর্ক থাকার অনুরোধ করা হলো।’

এছাড়াও সাইবার সিকিউরিটি-সংক্রান্ত যেকোনো উদ্ভূত সমস্যা দেখা দিলে বেবিচকের গঠিত সিএএবি সার্ট টিম, আইটি বিভাগ এবং জাতীয় সাইবার ইন্সিডেন্ট রেসপন্স টিমকে তাৎক্ষণিকভাবে জানাতে বলা হয়।