বাজারের সঙ্গে সমন্বয় করে লাভজনক রেল সেবা নিশ্চিত করতে চাই বাংলাদেশ রেলওয়ে

Passenger Voice    |    ১১:৫৫ এএম, ২০২৫-১০-১৩


বাজারের সঙ্গে সমন্বয় করে লাভজনক রেল সেবা নিশ্চিত করতে চাই বাংলাদেশ রেলওয়ে

বাজারের সঙ্গে সমন্বয় করে ভাড়া নির্ধারণ এবং আয় বাড়াতে আগ্রহী বাংলাদেশ রেলওয়ে। রেলওয়ের মহাপরিচালক মো. আফজাল হোসেন জানিয়েছেন, বর্তমান সময়ে রেলওয়ের আয়ের চেয়ে ব্যয় বেশি, তবে তা নিয়ন্ত্রণে আনা হচ্ছে। রোববার দুপুরে রাজধানীর রেল ভবনে সড়ক, রেলপথ, যোগাযোগ অবকাঠামো ও পরিবহণ সম্পর্কিত খাত নিয়ে কাজ পেশাদার সাংবাদিকদের সংগঠন রিপোর্টার্স ফর রেল অ্যান্ড রোড (আরআরআর) আয়োজিত এক মতবিনিময় তিনি এসব কথা বলেন।

আফজাল হোসেন বলেন, আমাদের এখন আয়ের তুলনায় ব্যয় বেশি। এক টাকা আয় করতে আমরা দুই টাকা ব্যয় করি। এটি পূর্বে আরও বেশি ছিল, তখন এক টাকা আয় করতে আড়াই টাকা ব্যয় হত। আমাদের পরিকল্পনা হলো আয়-ব্যয় পার্থক্য কমিয়ে আনা এবং ভাড়া বৃদ্ধি করে আর্থিক সক্ষমতা বাড়ানো। আমাদের বর্তমান ভাড়া প্রায় ১০ বছর আগের মূল্যে নির্ধারিত, সেই সময় থেকে টুইল, মেইনটেন্যান্স ও স্টাফ বেতনসহ অন্যান্য খরচ বেড়েছে। পেনশনেও প্রায় ১০০০ কোটি টাকা খরচ হয়, যা অপারেটিভ কস্টের অংশ।

তিনি বলেন, আমাদের মোট আয়ের ৮০–৯০ শতাংশ আসে ট্রেন অপারেশন থেকে। বাকি ১০ শতাংশ আসে নন-রেল ব্যবসা থেকে, যেমন অপটিক্যাল ফাইবার, রেলওয়ে ল্যান্ড এবং স্ক্র্যাপ। যদিও স্ক্র্যাপের দাম আন্তর্জাতিক বাজারের উপর নির্ভরশীল, আমরা যা পারি তা থেকে আয়ের সুযোগ বাড়াচ্ছি। এছাড়া নতুনভাবে ল্যান্ড ব্যবহার এবং অতিরিক্ত কোচ সংযোজনের মাধ্যমে আমরা আয়ের ধারা আরও বৃদ্ধি করতে চাই।

রেলওয়ের মহাপরিচালক বলেন, বর্তমানে আমাদের কাছে পর্যাপ্ত রোলিং স্টক ও ইঞ্জিন নেই, তাই সব চাহিদা মেটানো সম্ভব হচ্ছে না। উদাহরণস্বরূপ, ঢাকা-কক্সবাজার রুটে সাম্প্রতিক চার দিনের বন্ধের সময়ে প্রায় ১০০ শতাংশ যাত্রী উপস্থিতি থাকলেও সক্ষমতার অভাবে আমরা সব চাহিদা পূরণ করতে পারিনি। তবে আমরা নতুন কোচ এবং রোলিং স্টক যোগ করার মাধ্যমে দ্রুত এই সক্ষমতা বৃদ্ধি করার পরিকল্পনা নিয়েছি।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ রেলওয়ে সম্প্রতি আয়ের ধারা উন্নত করতে সক্ষমতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে ভাড়া সমন্বয়ের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। ঢাকা-চিটাগাং রুটে যাত্রী চাহিদা থাকলেও যথাযথ ইঞ্জিন ও কোচের অভাবে পুরো সক্ষমতা ব্যবহার করা সম্ভব হচ্ছে না। রেলওয়ে ধাপে ধাপে অতিরিক্ত কোচ সংযোজন করে আয়ের ধারাকে বাড়াতে উদ্যোগ নিয়েছে এবং বর্তমানে বিদ্যমান ভাড়া বাড়ানো এবং বাজারের সঙ্গে সমন্বয় করার মাধ্যমে আয় বৃদ্ধি করার পরিকল্পনা রয়েছে।

মো. আফজাল হোসেন বলেন, রেলওয়ের আয়ের উৎস সম্প্রসারণ, কোচ সংযোজন এবং বর্তমান সক্ষমতার উন্নয়নের মাধ্যমে আমরা বাজারের সঙ্গে সমন্বয় করে আরও টেকসই এবং লাভজনক রেল সেবা নিশ্চিত করতে চাই।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন পরিবহণ সেক্টরে নিয়োজিত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী শেখ মইনউদ্দিন, সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী সৈয়দ মঈনুল হাসান, ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফারুক আহমেদ, ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের (ডিটিসিএ) নির্বাহী পরিচালক নীলিমা আখতার, রিপোর্টার্স ফর রেল অ্যান্ড রোডের সভাপতি আনোয়ার হোসেন, সাধারণ সম্পাদক তাওহীদুল ইসলামসহ সংগঠনের অন্যান্য সদস্যরা।