শিরোনাম
Passenger Voice | ১২:৫৪ পিএম, ২০২৫-০৯-১৮
ভিত্তিহীন সংবাদ প্রকাশের অভিযোগে দৈনিক নয়া দিগন্ত পত্রিকার সম্পাদককে লিগ্যাল নোটিশ দিয়েছে এস. আলম গ্রুপ। গ্রুপের পক্ষে ব্যবস্থাপক (হিসাব) মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন স্বাক্ষরিত নোটিশটি পাঠান চট্টগ্রামের একজন সিনিয়র আইনজীবী। গতকাল বুধবার দৈনিক নয়া দিগন্ত পত্রিকার সম্পাদককে পাঠানো নোটিশে ৩০ দিনের মধ্যে ‘আ. লীগকে ফেরাতে নীলনকশা-এস. আলমের সাথে দিল্লিতে হাসিনার একাধিক গোপন মিটিং, প্রাথমিকভাবে আড়াই হাজার কোটি টাকা হস্তান্তর’ শিরোনামের প্রতিবেদনটি প্রত্যাহারের অনুরোধ জানানো হয়।
নোটিশে উল্লেখ করা হয়, নয়া দিগন্ত পত্রিকায় ‘আ.লীগকে ফেরাতে নীলনকশা-এস. আলমের সাথে দিল্লিতে হাসিনার একাধিক গোপন মিটিং, প্রাথমিকভাবে আড়াই হাজার কোটি টাকা হস্তান্তর’ শিরোনামে বিগত ২৭ আগস্ট একটি মিথ্যা, উদ্দেশ্যমূলক ও মানহানিকর প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে। বাস্তবতা হলো এস. আলম গ্রুপের সম্মানিত চেয়ারম্যান, ৭৩ বছর বয়সী সাইফুল আলম মাসুদ চিকিৎসাসহ বিভিন্ন ব্যবসায়িক কাজে সিঙ্গাপুরে অবস্থান করছেন। দেশের সব নিয়ম-কানুন মেনে দেশে তার সুবিশাল ব্যবসা-বাণিজ্য প্রাতিষ্ঠানিক নিয়মে পরিচালিত হচ্ছে।
প্রতিবাদে বলা হয়েছে, নয়া দিগন্ত পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে যেসব বক্তব্য দেওয়া হয়েছে তা কাল্পনিক। এস. আলম গ্রুপের ব্যবসাকে ধ্বংসের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কর্মরত ২ লাখ লোককে কর্মহীন ও লক্ষ কোটি টাকার অধিক বিনিয়োগ ধ্বংস করে দেশের অর্থনীতির মেরুদণ্ড ধ্বংস করার অসৎ উদ্দেশ্যে এসব করা হয়েছে বলে গ্রুপটি মনে করে।
প্রতিবেদনে এস. আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান সাইফুল আলমকে ২ থেকে ৫ আগস্ট ২০২৫ পর্যন্ত সৌদি আরবের মক্কা ও মদিনায় আওয়ামী নেতাদের সাথে এবং ৬ থেকে ১০ আগস্ট ২০২৫ এবং ১৬ আগস্ট ২০২৫ দিল্লিতে আওয়ামী নেতা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ ও গোপন মিটিংয়ে দেশকে অস্থিতিশীল করে পুনরায় আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের জন্য সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকা প্রদানের অঙ্গীকার করে আদানি গ্রুপের বিনিয়োগ থেকে উত্তোলনপূর্বক আড়াই হাজার কোটি টাকা প্রদানের কথা বলা হয়েছে। এই বক্তব্য সম্পূর্ণ মনগড়া, ভিত্তিহীন ও বানোয়াট। ইতোমধ্যে এস. আলম গ্রুপের পক্ষ থেকে তার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে এসব উদ্দেশ্যমূলক প্রতিবেদন প্রত্যাহারপূর্বক দুঃখ প্রকাশের জন্য অনুরোধ করলেও নয়া দিগন্ত তাতে কোনো সাড়া দেয়নি বা কোনো ব্যাখ্যাও দেয়নি।
প্রতিবেদনের বিষয়ে এস. আলম গ্রুপের সুস্পষ্ট বক্তব্য হলো, এস. আলম কোনো রাজনৈতিক সংগঠনের সঙ্গে সরাসরি জড়িত নন বা এস. আলম গ্রুপ আওয়ামী সরকারের আমলেও গঠিত হয়নি। প্রত্যেক সরকারের সাথে ওয়ার্কিং রিলেশন বজায় রেখে প্রতিষ্ঠানটি ১৯৮৫ সাল থেকে অত্যন্ত সুনামের সঙ্গে ব্যবসা চালিয়ে আসছে। তারা কখনো কোনো সরকারের প্রতিপক্ষ বা পক্ষ নেয়নি। বিগত আওয়ামী সরকারের দীর্ঘ শাসন আমলে এস. আলম গ্রুপ পূর্বের ধারাবাহিকতায় ঈর্ষণীয় ব্যবসা সফল হওয়ায় তার ব্যবসায়িক প্রতিদ্বন্দ্বী অনেক প্রতিষ্ঠানের ঈর্ষার শিকার। তারা আওয়ামী সরকারের সঙ্গে এস. আলম গ্রুপের ওয়ার্কিং রিলেশনকে ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে ও মিথ্যা তথ্য দিয়ে অপপ্রচারের মাধ্যমে দেশের বৃহৎ শিল্পপ্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে নিজেদের স্বার্থ হাসিল করতে চায়। তারা কখনো আওয়ামী লীগ সরকার আমলের আগের সরকারগুলোর সঙ্গে এস. আলম গ্রুপের সুন্দর ও সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ককে আলোচনায় না এনে শুধু আওয়ামী আমলের সম্পর্ককে জড়িয়ে তথ্য বিকৃত করে মিথ্যা, উদ্দেশ্যমূলক ও কুৎসামূলক প্রচারের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। নয়া দিগন্ত তাতে বিভ্রান্ত হয়ে ভুল ও মিথ্যা বয়ানের ওপর যে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে তাতে এস. আলম গ্রুপের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ২ লাখ কর্মচারীর চাকরি ও লক্ষাধিক কোটি টাকার বিনিয়োগকে ঝুঁকিতে ফেলার চেষ্টা করেছে, যা দেশের স্বার্থবিরোধী অপতৎপরতা। কারণ এস. আলম গ্রুপই বর্তমানে দেশের বৃহত্তর শিল্পগোষ্ঠী, যারা ৪০ বছর ধরে অত্যন্ত সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে ব্যবসায়িক কার্যক্রমের মাধ্যমে বর্তমানে সিমেন্ট, ভোজ্যতেল, সিআর কেব্ল, রঙিন ঢেউটিন, পরিশোধিত চিনি, পিপি ব্যাগ, এনার্জি উৎপাদন ও বিদ্যুৎ প্রকল্প প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি বিমা, তথ্য প্রযুক্তি, ব্যাংক, আর্থিক ব্যবসা, গণপরিবহন, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য চাল, গম, পেঁয়াজ, ছোলা, মটর, আমদানির কার্যক্রম করছে। এ ছাড়া বাংলাদেশ-চীনের যৌথ উদ্যোগে ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্পের মাধ্যমে দেশে প্রায় লক্ষাধিক কোটি টাকা বিনিয়োগের মাধ্যমে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রায় ২ লাখ লোকের কর্মসংস্থান করে দেশের অর্থনীতির চাকাকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। এ রকম একটি জাতীয় প্রতিষ্ঠানকে রাজনৈতিক ট্যাগ লাগিয়ে ক্ষতির চিন্তা দেশদ্রোহিতার শামিল।
নোটিশে বলা হয়, কোনো দেশদ্রোহী গোষ্ঠী নয়া দিগন্তকে বিভ্রান্ত করে বা অন্যভাবে বশীভূত করে এস. আলম গ্রুপের বিরুদ্ধে কুৎসা রটিয়ে তা ধ্বংস করে নিজেদের লাভবান করে দেশের ক্ষতির জন্য উঠেপড়ে লেগেছে। এস. আলম গ্রুপ ব্যবসা করে নিজের ও দেশের স্বার্থে। তারা কখনো কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জড়িত ছিল না, এখনো নেই। তারা পূর্বের ন্যায় সব সরকারের সঙ্গে ওয়ার্কিং রিলেশন বজায় রেখে চলা নীতিতে অবিচল এবং বর্তমানে তাই করছে। ভবিষ্যতেও তা করবে।
আইনি নোটিশে বলা হয়, দৈনিক নয়া দিগন্ত পত্রিকায় ২৭ আগস্ট প্রকাশিত ভিত্তিহীন, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে এস. আলম গ্রুপের পক্ষ থেকে গত ২৮ আগস্ট একটি ‘প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ’ পাঠানো হলেও তা প্রকাশ কিংবা এর ব্যাখ্যা প্রদান করেনি, যা সাংবাদিকতার নীতিমালার পরিপন্থি। এমনকি প্রতিবেদন তৈরির সময় সাংবাদিকতার নীতিমালা অনুযায়ী প্রতিবেদনের বিষয়ে এস. আলম গ্রুপের কোনো মতামত বা বক্তব্যও নেওয়া হয়নি।
অসত্য প্রতিবেদনের মাধ্যমে এস. আলম গ্রুপের এক লাখ কোটি টাকার সম্মানহানি ও ক্ষতি হয়েছে উল্লেখ করে নোটিশে বলা হয়, এর মাধ্যমে দেশে-বিদেশে, জনমনে বিভ্রান্তি ও প্রতিষ্ঠানের প্রতি বিরূপ ধারণা সৃষ্টি হয়েছে, যার ফলে দেশে ও বিদেশে প্রতিষ্ঠানটির মারাত্মক ব্যবসায়িক সুনামের ক্ষতি হয়েছে। এটি দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
নোটিশ প্রাপ্তির ৩০ দিনের মধ্যে গত ২৭ আগস্ট প্রকাশিত ভিত্তিহীন ও কুৎসামূলক সংবাদের জন্য দুঃখ প্রকাশ করে তা প্রত্যাহারের অনুরোধ জানানো হচ্ছে। অন্যথায় দেশের প্রচলিত দেওয়ানি ও ফৌজদারি আইনের আশ্রয় গ্রহণ করতে বাধ্য হবে এস. আলম গ্রুপ।
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত 2019 - 2025 PassengerVoice | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ
Developed By Muktodhara Technology Limited.
পাবলিক মতামত