ট্রেনে কাটা পড়ে ১০ বছরে ৯ হাজারের বেশি মৃত্যু, কারণ কী

Passenger Voice    |    ০৩:০৬ পিএম, ২০২৫-০৬-২১


ট্রেনে কাটা পড়ে ১০ বছরে ৯ হাজারের বেশি মৃত্যু, কারণ কী

ট্রেন যাওয়া-আসার জন্য পাশাপাশি দুটি রেললাইন। একটি লাইনে দাঁড়িয়ে অন্য লাইনে আসা চলন্ত ট্রেনের ভিডিও করছিলেন এক তরুণ। তিনি যেখানে দাঁড়িয়ে ভিডিও করছিলেন, হঠাৎ সেখান দিয়ে আরেকটি ট্রেন চলে আসে। এতে কাটা পড়ে মর্মান্তিক মৃত্যু হয় ওই তরুণের।

ঘটনাটি ঘটেছে গত ২ মে ঢাকার কুড়িল বিশ্বরোড এলাকায়। নিহত তরুণের নাম ইশতিয়াক আহমেদ। তিনি রাজশাহী সরকারি কলেজের স্নাতকের শিক্ষার্থী ছিলেন। খিলক্ষেতে খালার বাসায় তিনি বেড়াতে এসেছিলেন।

ঘটনাটি ঘটেছিল ইশতিয়াকের খালাতো ভাই মুস্তাফিজুর রহমানের সামনে। তিনি বলেন, ‘ইশতিয়াক যে রেললাইনে দাঁড়িয়ে ভিডিও করছিলেন, হঠাৎ দেখি সেখান দিয়ে একটি ট্রেন আসছে। বারবার চিৎকার করে ডাকলেও ইশতিয়াক সেটি শুনতে পাননি। ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়।’

রেলওয়ে পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, গত ১০ বছরে অসতর্কতা ও অসচেতনভাবে রেললাইন ব্যবহারের কারণে ৯ হাজার ২৩৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে গত তিন বছরে মৃত্যু বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ১৪০ জনে, অর্থাৎ এ সময়ে প্রতিদিন গড়ে ট্রেনে কাটা পড়ে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে।

অসতর্কভাবে রেললাইনে অবস্থান করে ট্রেনে কাটা পড়ে মৃত্যুর একটি ঘটনার উদাহরণ এটি। রেললাইনে এমন মৃত্যু প্রতিনিয়তই ঘটছে। রেলওয়ে পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, গত ১০ বছরে অসতর্কতা ও অসচেতনভাবে রেললাইন ব্যবহারের কারণে ৯ হাজার ২৩৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে গত তিন বছরে মৃত্যু বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ১৪০ জনে, অর্থাৎ এ সময়ে প্রতিদিন গড়ে ট্রেনে কাটা পড়ে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে।

রেললাইনে কাটা পড়ে মারা যাওয়ার ঘটনায় কাউকে দায়ী করা হয় না। রেলওয়ে আইন-১৮৯০ অনুযায়ী, অনুমতি ছাড়া রেললাইন ব্যবহার অবৈধ। এ কারণে রেললাইনে মৃত্যু হলে নিহত ব্যক্তিকেই দায়ী করা হয়। রেললাইন সরকারিভাবে সাধারণ চলাচলের জন্য নয় বলে সার্বক্ষণিক ১৪৪ ধারা জারি থাকে। আইন ভঙ্গ করে রেললাইনে প্রবেশে দুর্ঘটনা ঘটলে তা ‘অপমৃত্যু’ হিসেবে বিবেচিত হয়। এর দায়ভার কারও ওপর বর্তায় না।

রেললাইনে ট্রেনে কাটা পড়ে মৃত্যুর পেছনে মোটাদাগে চারটি কারণের কথা বলছেন রেলওয়ে পুলিশের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। এক, সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয় রেলক্রসিং দ্রুত পার হতে গিয়ে এবং রেললাইনের ওপর বসা বা চলাচলের কারণে। দুই, কানে হেডফোন লাগিয়ে রেললাইন পার হওয়া বা হাঁটার সময়। তিন. ট্রেনের ছাদ থেকে পড়ে যাওয়া। চার. রেললাইনকে ব্যবহার করে হত্যা ও আত্মহত্যা।

রেলওয়ে পুলিশের প্রধান ও অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক সরদার তমিজ উদ্দিন আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, প্রতিদিন গড়ে রেললাইনে তিনজন মানুষ মারা যাচ্ছেন। রেললাইনে মানুষ মারা যাওয়ার মূল কারণ হচ্ছে অসতর্কতা। মানুষ সচেতন না হলে এ মৃত্যু ঠেকানো সম্ভব নয়।

দুই কারণেই ৭৭ শতাংশের মৃত্যু
রেল পুলিশের তথ্য বলছে, শুধু রেলক্রসিং ঝুঁকিপূর্ণভাবে পারাপারের চেষ্টা এবং রেললাইনের ওপর বসা বা চলাচলের কারণে গত ১০ বছরে ট্রেনে কাটা পড়ে মারা গেছেন ৭ হাজার ৯৮ জন, অর্থাৎ মোট মৃত্যুর ৭৭ শতাংশই ঘটেছে এ দুই কারণে।

যেমন গত বছরের ৮ সেপ্টেম্বর রাত ১১টার দিকে কুড়িল বিশ্বরোড এলাকায় অসতর্কভাবে রেললাইন পার হওয়ার সময় শামসুর রহমান নামের ৬০ বছর বয়সী এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়। তাঁর বাড়ি চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে।

রেললাইনে ট্রেনে কাটা পড়ে মৃত্যুর পেছনে মোটাদাগে চারটি কারণের কথা বলছেন রেলওয়ে পুলিশের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। এক, সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয় রেলক্রসিং দ্রুত পার হতে গিয়ে এবং রেললাইনের ওপর বসা বা চলাচলের কারণে। দুই, কানে হেডফোন লাগিয়ে রেললাইন পার হওয়া বা হাঁটার সময়। তিন. ট্রেনের ছাদ থেকে পড়ে যাওয়া। চার. রেললাইনকে ব্যবহার করে হত্যা ও আত্মহত্যা।

শামসুর রহমানের ভাগনে শাকিব হাসান সম্প্রতি বলেন, কুড়িল বিশ্বরোড এলাকার পাশে একটি প্রতিষ্ঠানে পাঁচ বছর ধরে নিরাপত্তাকর্মী হিসেবে কাজ করতেন। সেখানেই তিনি থাকতেন। রেললাইন পার হওয়ার সময় তাঁর মামা ট্রেনে কাটা পড়েছেন বলে জানতে পেরেছেন।

চলতি বছরের ৪ জানুয়ারি ভোরে ঢাকা–টাঙ্গাইল মহাসড়কের পাশে ধলাটেংগর এলাকার রেললাইন থেকে নীলকান্ত মণ্ডল (৬০) ও তাঁর স্ত্রী কল্পনা রানী মণ্ডলের (৫৫) লাশ উদ্ধার করা হয়। পুলিশ জানায়, তাঁদের বাড়ি কালিহাতী উপজেলার দশকিয়া ইউনিয়নের টুনিমগড়া গ্রামে। ৩ জানুয়ারি রাতে তাঁরা পাশের গ্রাম রৌহা গ্রামে কীর্তন শুনতে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে রেললাইন দিয়ে হেঁটে বাড়ি ফিরছিলেন।

ঢাকা রেলওয়ে জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) আনোয়ার হোসেন বলেন, রেললাইন দিয়ে চলাচল ও রেললাইনে বসা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। অনেকে রেললাইনে বসে গল্প করেন। কেউ আবার গরম লাগলে রেললাইনে বসে আরাম করেন। এমন সাধারণ কারণে মানুষ মারা যাচ্ছেন, এটা কল্পনা করা যায়? মানুষ সচেতন না হলে এ ধরনের মৃত্যু ঠেকানো সম্ভব নয়।

মৃত্যুর কারণ কানে হেডফোন
গত বছরের ২২ জানুয়ারি জামালপুরের মেলান্দহের রুখনাইপাড়া এলাকায় ট্রেনে কাটা পড়ে মারা যান শাকিল মিয়া ও মজিবুর রহমান নামের দুই তরুণ। তাঁরা কানে হেডফোন লাগিয়ে রেললাইনে বসে গান শুনছিলেন। ট্রেনের শব্দ শুনতে পাননি।

এভাবে রেললাইনে বসে হেডফোন লাগিয়ে গান শোনা বা হেডফোন লাগিয়ে রেললাইন দিয়ে হেঁটে চলার কারণে প্রতিবছর অনেক মানুষ হতাহত হন। রেলওয়ে পুলিশের হিসাবে দেখা গেছে, গত এক দশকে কানে হেডফোন লাগিয়ে রেললাইনে হাঁটা বা বসার কারণে ৩৯৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে গত বছর মারা গেছেন ১১২ জন।

হেডফোন লাগিয়ে রেললাইনে হাঁটা বা বসে থাকা ছাড়াও অনেকেই মুঠোফোনে কথা বলতে বলতে রেললাইনে হাঁটতে থাকেন। এটাও ট্রেনে কাটা পড়ে মৃত্যুর অন্যতম কারণ। চলতি বছরের ১৮ মে ঢাকার উত্তরায় মুঠোফোনে কথা বলতে বলতে রেললাইনে চলে যান দক্ষিণখান থানার উপপরিদর্শক (এসআই) কে এম মনসুর আলী। এ সময় ট্রেন চলে এলেও তিনি সেটি খেয়াল করেননি। ট্রেনে কাটা পড়ে তাঁর মৃত্যু হয়। যদিও এ মৃত্যুর ঘটনায় মনসুরের ভাই শাকিবুল ইসলাম বলেছেন, তাঁর ভাইকে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে। তবে রেলওয়ে পুলিশ বলছে, এখন পর্যন্ত হত্যার কোনো আলামত পাওয়া যায়নি।

রেলওয়ে ঢাকা জেলার এসপি আনোয়ার হোসেন বলেন, রেললাইন দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় ট্রেন এলে অনেক সময় শব্দ আসে না। এর মধ্যে কানে হেডফোন বা মুঠোফোন থাকলে হুইসেল বাজালেও শব্দ ঠিকভাবে শোনা যায় না। ট্রেনের চালক সেটি খেয়াল করলেও কিছু করার থাকে না। কারণ, ট্রেন এমন একটা যান, চাইলেই তাৎক্ষণিকভাবে বন্ধ করা যায় না।

রেলওয়ে পুলিশ বলছে, বনানী থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত প্রায় পাঁচ কিলোমিটার রেললাইন সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনাপ্রবণ। এর মধ্যে কুড়িল বিশ্বরোড এলাকায় রেললাইনের একটি বাঁক রয়েছে। এতে এক পাশ থেকে ট্রেন এলে অন্য পাশে দেখা যায় না। ওই বাঁক দিয়ে প্রতিদিন বহু মানুষ যাতায়াত করলেও কোনো পদচারী–সেতু নেই।

বেশি মৃত্যু ঢাকায়
রেলওয়ে পুলিশের প্রধান ও অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক সরদার তমিজ উদ্দিন আহমেদ জানান, ট্রেনে কাটা পড়ে সবচেয়ে বেশি মানুষের মৃত্যু হয় ঢাকায়। ঢাকার সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা হচ্ছে বনানী থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত রেললাইন। এ এলাকায় গত এক বছরে ৯৩ জন ট্রেনে কাটা পড়ে মারা গেছেন।

এর কারণ সম্পর্কে রেলওয়ে পুলিশ বলছে, বনানী থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত প্রায় পাঁচ কিলোমিটার রেললাইন সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনাপ্রবণ। এর মধ্যে কুড়িল বিশ্বরোড এলাকায় রেললাইনের একটি বাঁক রয়েছে। এতে এক পাশ থেকে ট্রেন এলে অন্য পাশে দেখা যায় না। ওই বাঁক দিয়ে প্রতিদিন বহু মানুষ যাতায়াত করলেও কোনো পদচারী–সেতু নেই। ঝুঁকিপূর্ণভাবে দিনভর মানুষ যাতায়াত করেন। এখানেই সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়। আবার এ এলাকা মহাসড়কের পাশে হওয়ার কারণে সব সময় উচ্চ শব্দ থাকে। এতে রেললাইন পার হওয়া বা রেললাইন দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় ট্রেন এলেও মানুষ শব্দ শুনতে পান না।

ঢাকা জেলা রেলওয়ে পুলিশ বলছে, ঢাকা মহানগরীর মধ্যে কারওয়ান বাজার, খিলগাঁও, মগবাজার, মালিবাগ, গোপীবাগ এলাকাতেও ট্রেনে কাটা পড়ে বহু মানুষ হতাহত হন। এসব এলাকা থেকে প্রায়ই লাশ উদ্ধার হয়। এ ছাড়া গাজীপুর, টাঙ্গাইল ও নরসিংদীতেও ট্রেনে কাটা পড়ে মানুষ মারা যাওয়ার তথ্য পাওয়া যায়।

রেলওয়ে পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত চার বছরে ঢাকা জেলায় ট্রেনে কাটা পড়ে মারা গেছেন ১ হাজার ৭৬৩ জন। এ সময়ে সারা দেশে ট্রেনে কাটা পড়ে মারা গেছেন ৩ হাজার ৯১৮ জন, অর্থাৎ ঢাকা জেলায় মারা যান এক-তৃতীয়াংশ মানুষ। রেলওয়ের ঢাকা জেলার মধ্যে পড়েছে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, গাজীপুর, টাঙ্গাইল, নরসিংদী ও কিশোরগঞ্জ।

দায় নিচ্ছেন না কেউ
ট্রেনে কাটা পড়ে মৃত্যুর ঘটনায় নিহত ব্যক্তিকে দায়ী করা হচ্ছে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অরক্ষিত রেলক্রসিং, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের অবহেলা ও অব্যবস্থাপনার কারণে ট্রেনে কাটা পড়ে মানুষ মারা যাচ্ছেন। রেললাইনে হাঁটা বা বসা আইন অনুযায়ী নিষিদ্ধ। যাঁরা আইন মানছেন না, তাঁদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়ার নজির নেই। রেললাইনের নিরাপত্তার জন্য রেলওয়ে বিভাগের নিরাপত্তা বাহিনী রয়েছে। আইন অনুযায়ী তাঁরা গ্রেপ্তারও করতে পারেন। অথচ তাঁরা রেললাইনের নিরাপত্তায় কার্যকর ব্যবস্থা নিতে পারছেন না।

রেলওয়ে পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, সারা দেশে মোট রেলক্রসিং আছে ৩ হাজার ১১১টি। এর মধ্যে অনুমোদন আছে ১ হাজার ৮৮৬টির। এ হিসাবে ১ হাজার ২২৫টির অনুমোদন নেই, অর্থাৎ দেশের মোট রেলক্রসিংয়ের প্রায় ৪০ শতাংশেরই অনুমোদন নেই। কোনো ধরনের অনুমোদন ছাড়া সড়ক ও জনপথ বিভাগ এবং স্থানীয় সরকার বিভাগ রেললাইনের ওপর দিয়ে সড়ক নির্মাণ করায় এ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এ ক্ষেত্রে সরকারি বিভিন্ন সংস্থার মধ্যে সমন্বয় নেই বলেই মনে করেন রেলওয়ে পুলিশের কর্মকর্তারা। তবে এ নিয়ে কেউ নাম প্রকাশ করে বক্তব্য দিতে রাজি হননি।

রেলওয়ে পুলিশের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ করার শর্তে বলেন, অরক্ষিত রেলক্রসিং মৃত্যুর অন্যতম কারণ। এগুলো তদারকি ও রেলক্রসিংয়ে গেটম্যান নিয়োগ দেওয়া রেলওয়ের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। এমনকি রেললাইনে যেন কেউ যেতে না পারে, সেটি দেখার দায়িত্বও রেলওয়ে বিভাগের।

এই কর্মকর্তা বলেন, রেলওয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সময় প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে রেললাইনের দুই পাশে নিরাপত্তাবেষ্টনী দেওয়ার জন্য। বিশেষ করে ঢাকার জনবহুল এলাকাগুলোয় নিরাপত্তাবেষ্টনী দেওয়া গেলে প্রাণহানি অনেক কমে আসত।

খুনকে দুর্ঘটনা সাজানোর চেষ্টাও আছে
চলতি বছরের ১৮ ফেব্রুয়ারি সকালে দিনাজপুরের পার্বতীপুরে হলদিবাড়ি রেললাইন থেকে হাত বাঁধা ও মাথা বিচ্ছিন্ন অবস্থায় এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করে রেলওয়ে পুলিশ।

পুলিশ বলছে, ভরত চন্দ্র রায় (৫০) নামের ওই ব্যক্তির লাশের হাত বাঁধা অবস্থায় ছিল। এ কারণে মোটামুটি নিশ্চিত এই ব্যক্তিকে হত্যার পর লাশটি রেললাইনে ফেলে রাখা হয়েছিল।

পার্বতীপুর রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. ফখরুল ইসলাম বলেন, এখন পর্যন্ত এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত কাউকে শনাক্ত করা যায়নি। তদন্ত চলছে।

পুলিশ সদর দপ্তরের অপরাধ পরিসংখ্যানের তথ্য বলছে, ২০১৯ থেকে ২০২৫ সালের মে মাস পর্যন্ত গত সাড়ে ছয় বছরে রেলওয়ে থানা এলাকায় হত্যা মামলা হয়েছে ৯২টি। চলতি বছরের প্রথম পাঁচ মাসে হত্যা মামলা হয়েছে পাঁচটি।

রেলওয়ে পুলিশের কর্মকর্তারা বলছেন, অন্যত্র খুনের পর অনেক সময় রেললাইনে লাশ ফেলে রাখার ঘটনা ঘটে। এর মূল কারণ হচ্ছে আলামত নষ্ট করা, খুনের ঘটনা দুর্ঘটনা বলে চালিয়ে দেওয়া। এ ছাড়া ছিনতাইকারীদের হাতেও অনেক ট্রেনযাত্রী খুনের শিকার হচ্ছেন।