আমদানি-রপ্তানি সেবা সহজ করতে কেনা হচ্ছে সফটওয়্যার

Passenger Voice    |    ০৩:০০ পিএম, ২০২৩-০৩-২৪


আমদানি-রপ্তানি সেবা সহজ করতে কেনা হচ্ছে সফটওয়্যার

আমদানি-রপ্তানিকারকদের সহজে সেবা দিতে ন্যাশনাল সিঙ্গেল উইন্ডো প্রকল্প গ্রহণ করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এর আওতায় দুবাইভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ওয়েব ফন্টেইন গ্রুপের কাছ থেকে ২১৭ কোটি ৯৯ লাখ টাকায় সফটওয়্যার কেনা হচ্ছে। এ ছাড়া স্পট মার্কেট থেকে আরও এক কার্গো এলএনজি আমদানিসহ মোট সাতটি ক্রয় প্রস্তাবের অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি।   

বৃহস্পতিবার অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে সরকারি ক্রয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভা শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সাঈদ মাহবুব খান সাংবাদিকদের বলেন, এনবিআরের মাধ্যমে ন্যাশনাল সিঙ্গেল উইন্ডো বাস্তবায়ন, কাস্টমস আধুনিকায়ন ও জোরদারকরণ প্রকল্পের আওতায় সফটওয়্যার কার্যক্রম এবং অটোমেটেড রিস্ক ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম বাস্তায়নে সফটওয়্যার কেনার প্রস্তাবে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। দুবাইভিক্তিক প্রতিষ্ঠান ওয়েব ফন্টেইন গ্রুপের কাছ থেকে ২১৭ কোটি ৯৯ লাখ টাকায় এ সফটওয়্যার কেনা হবে।

এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, আমদানি-রপ্তানি আবেদন গ্রহণ, প্রক্রিয়াকরণের মাধ্যমে আমদানি-রপ্তানিকারকদের সহজে সেবা দিতে ২০১৭ সালে ন্যাশনাল সিঙ্গেল উইন্ডো প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। এতে ব্যবসা-বাণিজ্যে খরচ ও সময় সাশ্রয় এবং পণ্য খালাসে দীর্ঘসূত্রতা হ্রাস পাবে বলে আশা করা হয়। এ লক্ষ্যে ইতোমধ্যে সরকারি একাধিক সংস্থার সঙ্গে সমঝোতা চুক্তিও সম্পন্ন করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে এর প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয় ৫৮৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে বিশ্বব্যাংক অর্থায়ন করবে ৫২৯ কোটি টাকা এবং সরকার দেবে ৫৫ কোটি টাকা।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠান এক্সেলারেট এনার্জি থেকে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানির প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন অতিরিক্ত সচিব। দেশটি থেকে প্রায় ৫৭৯ কোটি টাকায় ৩৩ লাখ ৬০ হাজার এমএমবিটিইউ এলএনজি আমদানি করা হবে।

উচ্চমূল্যের কারণে গত জুলাই থেকে স্পট মার্কেট (আন্তর্জাতিক খোলাবাজার) থেকে এলএনজি আমদানি বন্ধ রেখেছিল সরকার। কিন্তু বর্ধিত চাহিদা মেটাতে গত ১ ফেব্রুয়ারি ফের স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি আমদানির অনুমোদন দেয় সরকার। এর পর কয়েক কার্গো আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

এ ছাড়া ৩৬৭ কোটি ৫৬ লাখ টাকায় ৭০ হাজার টন ইউরিয়া ও ডিএপি সার কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এ প্রসঙ্গে অতিরিক্ত সচিব সাঈদ মাহবুব খান জানান, রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চুক্তির আওতায় মরক্কোর ওসিপি, এসএ থেকে ৪০ হাজার টন ডিএপি সার আমদানি প্রস্তাবে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ২৬২ কোটি টাকায় এ সার আমদানি করবে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি)।

তিনি আরও বলেন, কর্ণফুলী ফার্টিলাইজার কোম্পানির (কাফকো) কাছ থেকে ৩০ হাজার টন ব্যাগড গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার কেনার প্রস্তাবে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ১০৫ কোটি ৪৩ লাখ টাকায় এ ইউরিয়া কিনবে বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশন (বিসিআইসি)।

এদিকে ৭২ কোটি ৯১ লাখ টাকায় ভারতীয় কোম্পানি উমা এক্সপো থেকে ৮ হাজার টন মসুর ডাল কেনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন অতিরিক্ত সচিব। প্রতি কেজি ৯১ টাকা ১৪ পয়সা দরে এ ডাল আমদানি করবে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)। ভারতীয় কোম্পানিটির স্থানীয় এজেন্ট হচ্ছে ফিউচার ইনফ্রাস্ট্রাকচার অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট প্রাইভেট লিমিটেড।

সভায় ৬০ কোটি টাকা ব্যয়ে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের দুটি ক্রয় প্রস্তাবে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ‘বরিশাল-ভোলা-লক্ষ্মীপুর সড়কের বরিশাল থেকে ভোলা হয়ে লক্ষ্মীপুর পর্যন্ত যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ’ প্রকল্পে ১৫ কোটি ২১ লাখ ৬৬ হাজার টাকা ব্যয় বৃদ্ধির ক্রয় প্রস্তাবে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। মো. মাইনউদ্দিন (বাসি) লিমিটেড এ পূর্তকাজ বাস্তবায়ন করছে।

এ ছাড়াও ‘টেকনিক্যাল অ্যাসিস্ট্যান্স ফর রোড ট্রান্সপোর্ট কানেকটিভিটি ইমপ্রুভমেন্ট প্রজেক্ট প্রিপারেটরি ফ্যাসিলিটি’ প্রকল্পের আওতায় ৪৪ কোটি ৪২ লাখ টাকায় পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। যৌথভাবে অস্ট্রেলিয়ার এসএমইসি, জাপানের ওসিজি, কোরিয়ার দোহা ইঞ্জিনিয়ারিং এবং বাংলাদেশের ডিডিসিকে নিয়োগ দেওয়া হয়।

এর আগে অর্থমন্ত্রীর সভাপতিত্বে অর্থনৈতিক বিষয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কন্টেইনার টার্মিনালসহ ওভারফ্লো কন্টেইনার ইয়ার্ড পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণ আন্তর্জাতিক মানের বেসরকারি অপারেটর নিয়োগ প্রকল্পটি সরকারি-বেসরকারি অংশীদারি (পিপিপি) ভিত্তিতে বাস্তবায়নের নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়।

 

প্যা.ভ/ত