করোনায় কেউ খবর রাখেনি মোটর ড্রাইভিং ইন্সট্রাক্টরদের

Samsuddin Chowdhury    |    ০৭:৫১ এএম, ২০২০-০৪-১৪


করোনায় কেউ খবর রাখেনি মোটর ড্রাইভিং ইন্সট্রাক্টরদের

সামসুদ্দীন চৌধুরীঃ দৈনিক হাজিরায় কিছু ড্রাইভিং ইন্সট্রাক্টর সরকারের প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়েরর জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর আওতায় পরিচালিত কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সেইপ প্রজেক্টে কাজ করেন।

আবার অনেকে শুধু ড্রাইভিং স্কুলে ইন্সট্রাক্টর হিসেবে কাজ করেন। তারাও প্রায় দৈনিক হাজিরা দেওয়া শ্রমিক। করোনা ভাইরাস এর মহামারির এই সময়ে সরকার সবার জন্য প্রনোদনার ব্যবস্থা করেছে, ত্রাণ ও দিচ্ছে মধ্যবিত্ত, নিন্মবিত্ত ও ছিন্নমূল মানুষদের।  অথচ প্রায় ৫ মাস বেতনও পায়নি পরিবহনের চালক তৈরির এই কারিগররা।     

সরকারের প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের স্কিল ফর এমপ্লয়মেন্ট ইনভেস্টমেন্ট প্রজেক্ট (এসইআইপি) ও এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের (এডিবি) যৌথ অর্থায়নে এক লাখ গাড়ি চালককে প্রশিক্ষণ দিয়ে দক্ষ করে গড়ে তোলার জন্য আগামী পাঁচ বছরের এই প্রকল্পটি নিয়ে যৌথভাবে কাজ করছে জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি), বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ), বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট কর্পোরেশন (বিআরটিসি)।

রাজধানীতে দুটিসহ সারাদেশে ২০টি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের মাধ্যমে ২০১৮ সালে প্রথম কিস্তিতে প্রশিক্ষণ কার্যক্রম শুরু করেছে সরকার।

প্রশিক্ষণ সম্পর্কে বাংলাদেশ-কোরিয়া টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টারের (বিকেটিটিসি) অধ্যক্ষ প্রকৌশলী মো. সাখাওয়াত আলী জানান, বেশির ভাগ সময় অদক্ষ জনশক্তি বিদেশে যাচ্ছে, তাই অদক্ষ জনশক্তিকে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ করে গড়ে তুলতে স্কিল ফর এমপ্লয়মেন্ট ইনভেস্টমেন্ট প্রজেক্টের (এসইআইপি) আওতায় মধ্যপ্রাচ্যে প্রায় একলাখ দক্ষ জনশক্তি রফতানির একটা বড় ধরনের কর্মসূচি হাতে নিয়েছে সরকার। এই প্রশিক্ষণে ড্রাইভারদের ভাষাগতভাবে দক্ষ করে তোলা হবে। বিশ্ববাজার বিবেচনায় তাদের ইংরেজি এবং আরবি ভাষাও শেখানো হচ্ছে। একটা গবেষণায় দেখা গেছে, আমরা যদি অদক্ষতার বিপরীতে দক্ষ লোকবল পাঠাই তা হলে রেমিটেন্স ৩ থেকে ৪ গুণ বেশি আসবে। 

বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটির (বিআরটিএ) অধীনে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ১০০ জনকে এ প্রশিক্ষণের প্রশিক্ষক হিসেবে তৈরি করা হয়েছে। তারা আগামী পাঁচ বছর এক লাখ মানুষকে গাড়ি চালানোসহ প্রাত্যহিক জীবনের বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ দেবেন। যাতে করে বেসিক বিষয়ে তাদের ধারণা থাকে। তাদের প্রশিক্ষণের গুণগত মান বজায় আছে কি না তা দেখভাল করছে বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ)।

দৈনিক হাজিরা ভিত্তিতে ৬১টি কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, ২১টি টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ এবং ২১টি বি আর টি সি তে এই ড্রাইভিং কোর্স চলে সেখানে একজন করে মোটর ড্রাইভিং ইন্সট্রাক্টর ও একজন করে সহকারী এবং একজন আরবী এবং একজন ইংলিশ ভাষা শিক্ষক রয়েছে, গত ৪ মাস ধরে এই ইন্সট্রাক্টররা কেউ বেতন পায়নি,  করোনার এই ভয়াবহ দূর্যোগের মূহুর্তে কোন বেতন চলমান নেই, কাজ না করলে বেতন বন্ধ, অফিস বন্ধ তাই বেতন ও বন্ধ। 

পরিবার নিয়ে বিপাকে পড়েছেন অনেক ড্রাইভিং ইন্সট্রাক্টর প্যাসেঞ্জার ভয়েসের সাথে আলাপকালে আমির হোসাইন নামের এক ইন্সট্রাক্টর বলেন,  এই মহামারি মুহূর্তে আমাদের বেতনগুলো পরিশোধ করে দিলে অথবা আমাদের এককালীন কিছু থোক বরাদ্দ দিলে পরিবার পরিজন নিয়ে চলতে পারি, আমরা যেহেতু দৈনিক হাজিরা ভিত্তিক কাজ করি, এর পরিবর্তে মাসিক একটা বেতন নির্ধারন করে দিলে আমাদের জন্য উপকার হয়। 

তিনি মনে করেন, সড়ক দূর্ঘটনা কমানোর লক্ষ্যে সরকার অনেক প্রকল্প হাতে নিয়েছেন সেই সব প্রকল্পগুলো স্থায়ীভাবে চালু করলে, স্থায়ী ভাবে নিয়োগ প্রদান করলে সড়কে অনেক শৃংখলা ফিরে আসবে, অনেক বেকার সমস্যা সমাধান হবে এবং দেশের চলমান অর্থনিতিতে উন্নয়ন হবে। অনেক শিক্ষিত বেকার আছে যারা ড্রাইভিং প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে সহজেই ড্রাইভিং পেশার চাকরীতে আসতে পারবে।