কাউন্সিলর হিরনের রাজত্বে বাধ সাধবে দুদক

Passenger Voice    |    ০৩:৪৯ পিএম, ২০২০-০৭-১৩


কাউন্সিলর হিরনের রাজত্বে বাধ সাধবে দুদক

নিজস্ব প্রতিবেদক: ২০ বছরের চলা চট্টগ্রামের ১৩ নং পাহাড়তলি ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মোহাম্মদ হোসেন হিরনের রাজ্বত্বে এবার বাধ সাধবে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। চলছে অনুসন্ধান।রেলের জমি দখল,চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি সহ অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে এই কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে। ২০১৯ সালের ১৮ই নভেম্বর দুর্নীতি দমন কমিশন দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় চট্টগ্রাম বরাবর একটি অভিযোগ জমা হয়। 

চলতি বছরের ৫ জানুয়ারী যাচাই বাছাই করার জন্য চট্টগ্রাম কার্যালয় থেকে দুদকের সদর কার্যালয়ে কমিশন বরাবর পাঠানো হয়। কমিশনে প্রথমিক যাচাই বাছাই শেষে একই বছরের ৫ মার্চ ৯৯১৩ নং স্বারক মূলে দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় চট্টগ্রামকে চুড়ান্ত অনুসন্ধানের নির্দেশ দেওয়া হয়। ১৫ মার্চ বিষয়টি অনুসন্ধানের জন্য দুদক চট্টগ্রাম জেলার সহকারী পরিচালক মো. রিয়াজ উদ্দিনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়।

দুদকের অভিযোগে বলা হয়, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু কর্তৃক ভুমিহীনদের জন্য বরাদ্ধকৃত ১২.৬৬ একর সরকারী পরিত্যক্ত সম্প্রত্তি দখলের মাধ্যমে আলোচনায় আসা মোহাম্মদ হোসেন হিরন এখন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের তিনবারের কাউন্সিলর। তিনি ২০১৭ সালের দিকে চট্টগ্রামের যুবলিক নেতা হেলাল আকবর চৌধুরী বাবর, জোড়া খুন মামলার আসামি সাবেক ছাত্র নেতা লিমন, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সহ-সভাপতি শফিকুর রহমান স্বপনকে নিয়ে একটি সর্বদলিয় রেলওয়ে ঠিকাদার সমিতি গঠন করে বাংলাদেশ রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের প্রতিটি টেন্ডার থেকে তারা সমিতির নামে ১০ শতাংশ  কমিশন নিয়ে থাকে। ২০১৭ সালে আলোচিত এই কাউন্সিলর রেলওয়ে প্রথম শ্রেণীর ঠিকাদার হিসেবে লাইসেন্স নিলেও ২০০৯ সাল থেকে তিনি এইসব টেন্ডার কার্যক্রম নিয়ন্ত্রন করতেন। 

এছাড়াও সরকারী পরিত্যাক্ত সম্পত্তিতে মসজিদ নির্মাণের নামে ১৫/২০টি দোকান তৈরি করে প্রতি দোকান ৪/৫ লাখ টাকা করে বিক্রি করে মোটাদাগে টাকা আয় করেছেন। বর্তমানে এই কাউন্সিলর রেলওয়ে ঠিকাদারি সমিতির সভাপতির দায়িত্বে না থাকলেও তার টেন্ডার সম্রাজ্যের প্রধান সহযোগী মাহমুদুর রহমানের মাধ্যমে বখরা আদায় করেন।

বাংলাদেশ রেলের সেগুনবাগান কলোনি, ডিজেল কলোনি, টাইগারপাস কলোনি, নিউ ঝাউতলা কলোনি, টি পি পি কলোনি, এক্স ই এন কলোনি, পানির ট্যাংকি কলোনিতে হাজার হাজার ঘর তৈরি করে ঘর প্রতি ২-৩ লাখ টাকা হিসাবে বিক্রি করে শত কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলেও অভিযোগে আছে। ওয়ারলেস ঝাউতলা বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় ও টাইগার পাস উচ্চ বিদ্যালয়ের জমিতে মার্কেট তৈরি করে দোকান বিক্রি করা। জাকির হোসেন রোডের বিজিএমইএ ভবনের রাস্তার দুই পাশে দোকান তৈরি করে বিক্রি করাসহ ডজন খানেক অভিযোগের কথা দুদকের এই অভিযোগে বলা হয়েছে। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুদকের এক কর্মকর্তা বলেন, প্রাথমিকভাবে আমাদের হাতে কিছু নথিপত্র এসেছে। যেখানে সরকারি জমি অবৈধ দখলের বিষয়টি উঠে এসেছে। 

এছাড়াও দুর্নীতি, অবৈধ দখল ও চাঁদাবাজির মাধ্যমে তিনি নগরীর খুলশী থানাধীন ভিআইপি আবাসিক এলাকায় একটি ১২ তলা নির্মাণাধীন ভবন,নোয়াখালির সেনবাগ থানায় শত বিগা জমি, পুকুর বাড়ী সহ অসংখ্য সম্পদ গড়ে তোলার বিষয়টি নিয়েও আমরা অনুসন্ধান করবো। 

এ বিষয়ে দুদক চট্টগ্রাম জেলা কার্যালয় সাজেকা ২ এর তদন্তকারী কর্মকর্তা সহকারী পরিচালক মো. রিয়াজ উদ্দিন বলেন, আমরা ইতিমধ্যে কাউন্সিলর মোহাম্মদ হোসেন হিরনের বিরুদ্ধে অভিযোগের অনুসন্ধান শুরু করেছি। শীগ্রই তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করা হবে।