শিরোনাম
Passenger Voice | ১২:৫৭ পিএম, ২০২৩-০১-২৭
কয়েক দশকের মধ্যে সর্বনিম্ন প্রবৃদ্ধিতে যাচ্ছে বিশ্ব অর্থনীতি। এর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে শুরু করেছে বিশ্বের দেশে দেশে। ফলে বাংলাদেশসহ রপ্তানিনির্ভর দক্ষিণ এশিয়ার অর্থনীতিতে চ্যালেঞ্জ আরো বাড়ছে। গত বুধবার বিশ্ব অর্থনীতি নিয়ে জাতিসংঘ প্রকাশিত সর্বশেষ প্রতিবেদনে বলা হয়, বৈশ্বিক শ্লথ প্রবৃদ্ধি ও সুদের হার বৃদ্ধি এ অঞ্চলের বিনিয়োগ ও রপ্তানিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, খাদ্য ও জ্বালানির উচ্চমূল্যের কারণে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর অর্থনৈতিক সম্ভাবনায় উল্লেখযোগ্য অবনতি হয়েছে। এর পাশাপাশি কঠোর মুদ্রানীতি ও নাজুক রাজস্ব অবস্থাও এর অন্যতম কারণ। এতে বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার নাম উল্লেখ করে বলা হয়, এ দেশগুলো আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কাছে ২০২২ সালে আর্থিক সহায়তা চেয়েছে।
সংস্থা জানায়, ২০২২ সালে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে গড় জিডিপি প্রবৃদ্ধি হয় ৫.৬ শতাংশ। ২০২৩ সালে তা আরো কমে হবে ৪.৮ শতাংশ। এ বছর বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধি আসবে ১.৯ শতাংশ, যা ২০২২ সালের ৩ শতাংশ থেকে প্রায় অর্ধেক কমবে। তবে মূল্যস্ফীতি কমে এলে ও বৈশ্বিক অর্থনীতিতে কিছুটা গতি এলে ২০২৪ সালে প্রবৃদ্ধি কিছুটা বেড়ে হবে ২.৭ শতাংশ।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২৩ সালে বাংলাদেশের প্রকৃত জিডিপি প্রবৃদ্ধি হবে ৬.০ শতাংশ। এ ছাড়া ২০২৩ সালে বাংলাদেশের ভোক্তা মূল্যস্ফীতি থাকবে ৭.৪ শতাংশ। দক্ষিণ এশিয়ার অন্য দেশগুলোর মধ্যে বন্যায় ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় ২০২৩ সালে পাকিস্তানের অর্থনীতিতে প্রবৃদ্ধি কমে হবে ২.৫ শতাংশ। শ্রীলঙ্কার অর্থনীতি ২০২২ সালে সংকুচিত হয় ৯ শতাংশ, ২০২৩ সালে সংকুচিত হবে ৩.২ শতাংশ। এ বছর ভারতের অর্থনীতিতে প্রবৃদ্ধি আসবে ৫.৮ শতাংশ। ২০২২ সালে প্রবৃদ্ধি ছিল ৬.৪ শতাংশ।
সংস্থা জানায়, অ্যাঙ্গোলা, বাংলাদেশ, ভুটান, লাও পিপলস ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক, নেপাল, সাও টোমে অ্যান্ড প্রিন্সিপে এবং সলোমন আইল্যান্ড—এই সাতটি দেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে উত্তরণের প্রক্রিয়ায় রয়েছে। কিন্তু ভুটান, সলোমন আইল্যান্ড এবং লাও পিপলস ডেমোক্রেটিক রিপাবলিকের রাজস্ব ঘাটতি করোনার পর থেকে বেড়েই চলেছে। যদিও নেপাল ও বাংলাদেশের রাজস্ব ভারসাম্য অপরিবর্তিতই রয়েছে।
দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলে তীব্র খাদ্যসংকটে থাকা মানুষের সংখ্যা বেড়েছে ২০২২ সালে। বিশেষ করে আফগানিস্তান, বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কায়। পরিস্থিতি উত্তরণে বাংলাদেশ সরকার চাল আমদানিতে শুল্ক কমিয়েছে, সারে ভর্তুকি বাড়িয়েছে এবং কৃষি খাতে বাজেট বরাদ্দ বাড়িয়েছে।
বছরের শুরুতে বিশ্বব্যাংক প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্ব অর্থনীতি ‘বিপজ্জনকভাবে মন্দার কাছাকাছি’। আর সেই মন্দার আঁচ লাগবে বাংলাদেশেও। চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি কমে হবে ৫.২ শতাংশ। এর পাশাপাশি উচ্চমূল্যস্ফীতি, সুদের হার বৃদ্ধি এবং ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার জেরে বিশ্বের জিডিপি প্রবৃদ্ধি কমবে। বিশ্ব অর্থনীতি দীর্ঘমেয়াদে শ্লথ হচ্ছে। এ বছর বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধি হবে ১.৭ শতাংশ।
বিশ্বব্যাংক আরো জানায়, বৈশ্বিক পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ ব্যাংক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিশ্বজুড়ে জ্বালানির দাম বেড়ে যাওয়ায় বাংলাদেশের জন্য উচ্চমূল্যে জ্বালানি আমদানি কঠিন হয়ে পড়ে। এতে গৃহস্থালি ও ব্যবসা-বাণিজ্যে জ্বালানি সরবরাহ করার সক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। এমনকি জ্বালানির খরচ বেড়ে যাওয়ায় এবং সরবরাহ জটিলতায় শিল্প উৎপাদন সংকুচিত হয়েছে গত সেপ্টেম্বরে। যেখানে গত মার্চে সর্বোচ্চ উৎপাদন হয়েছিল। আমদানি ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় ২০১৯ সাল থেকে বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতি বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে।
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত 2019 - 2023 PassengerVoice | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ
Developed By Muktodhara Technology Limited.
পাবলিক মতামত