বিএম ডিপোর বিস্ফোরণ

রপ্তানিপণ্য ভর্তি ১৬ কাভার্ডভ্যান ক্ষতিগ্রস্ত

Passenger Voice    |    ০১:৫৭ পিএম, ২০২২-০৬-২০


রপ্তানিপণ্য ভর্তি ১৬ কাভার্ডভ্যান ক্ষতিগ্রস্ত

সীতাকুণ্ডের সোনাইছড়িতে বিএম কনটেইনার ডিপোতে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় চারজন কাভার্ডভ্যান চালক ও একজন সহকারী নিখোঁজ রয়েছেন। নিহত হয়েছেন একজন চালক। ১৩ জন পরিবহন শ্রমিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এ ছাড়া ডিপোতে থাকা রপ্তানিপণ্য ভর্তি ১৬টি কাভার্ডভ্যান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ঘটনায় এ পর্যন্ত সীতাকুণ্ড থানায় ৯টি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। গতকাল সকালে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়। আন্তঃজেলা মালামাল পরিবহন সংস্থা ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান মালিক সমিতি, বাংলাদেশ ট্রাকচালক শ্রমিক ফেডারেশন, চট্টগ্রাম জেলা ও মহানগর শাখা যৌথভাবে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বাংলাদেশ কাভার্ডভ্যান ট্রাক প্রাইমমুভার পণ্যপরিবহন মালিক অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব চৌধুরী জাফর আহম্মদ। খবর আমাদের সময়

সংবাদ সম্মেলনে পুড়ে যাওয়া গাড়ির, নিহত পরিবহন শ্রমিকদের পরিবার এবং আহত শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণসহ উন্নত চিকিৎসার দাবি জানান পরিবহন মালিকরা। একই সঙ্গে সব বেসরকারি কনটেইনার ডিপো পরিচালনায় ‘আইসিডি নীতিমালা-২০১৬, সংশ্লিষ্ট আইন ও আন্তর্জাতিক মানদ-’ অনুযায়ী নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবি জানানো হয়।

জাফর আহম্মদ বলেন, বিএম ডিপোর অগ্নিকা- ও বিস্ফোরণের ঘটনায় পণ্যপরিবহন শ্রমিকসহ এ পর্যন্ত ৪৯ জন মানুষ নির্মম মৃত্যুর শিকার হয়েছেন। চার শতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন। প্রাণে বেঁচে গেলেও এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক বাকি জীবনের জন্য শারীরিকভাবে অক্ষম ও পঙ্গুত্ববরণ করবেন বলে চিকিৎসকদের আশঙ্কা। তাদের ভবিষ্যৎ অন্ধকার। ঘটনার সময় ডিপোতে থাকা পণ্যপরিবহন যান বিশেষত, কাভার্ডভ্যান, প্রাইমমুভার-ট্রেইলার ও ট্রাকগুলো সৃষ্ট ধ্বংসযজ্ঞে মাটির সঙ্গে মিশে গেছে। এসব গাড়ির মালিক কষ্টার্জিত সম্পদ হারিয়ে এখন হতাশা ও আর্থিক অনিশ্চয়তার মধ্যে আছেন।

গাড়ির উপযুক্ত ক্ষতিপূরণের জন্য মালিকরা সমিতির কার্যালয়ে এসে প্রতিনিয়ত ধরনা দিচ্ছেন উল্লেখ করে জাফর বলেন, একইভাবে হতাহত শ্রমিক পরিবারের সদস্যরাও আসছেন। হতাহতদের জন্য ডিপোর মালিক নগণ্য আর্থিক ক্ষতিপূরণের ঘোষণা দিয়েছেন। কিন্তু আন্তঃজেলা ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান মালিক সমিতির সদস্যদের ক্ষতিগ্রস্ত গাড়ির ক্ষতিপূরণের বিষয়ে এখনো নীরব। বিষয়টি আমরা বিএম ডিপো মালিকপক্ষকে অবহিত করেছি এবং দায়িত্বশীল সরকারি কর্তৃপক্ষকে গাড়ির তালিকা দিয়েছি। অগ্নিকা- ও বিস্ফোরণে ক্ষতিগ্রস্ত পণ্যপরিবহন যান ও নিহত পণ্যপরিবহন শ্রমিকদের পরিবারকে উপযুক্ত আর্থিক ক্ষতিপূরণ, আহত শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণসহ উন্নত চিকিৎসা ব্যবস্থা নিশ্চিত না করলে মালিক-শ্রমিক যৌথ আন্দোলনে যাওয়া ছাড়া উপায় থাকবে না।

সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, প্রতিপালনীয় নিয়মনীতির উপেক্ষা এবং ডিপো মালিকের ঘৃণ্য লোভের কারণে বলি হয়েছে অসংখ্য মানুষের জীবন। ধ্বংস হয়েছে শত হাজার কোটি টাকার সম্পদ। ‘আইসিডি নীতিমালা-২০১৬’ ও অন্যান্য আইন অনুযায়ী নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করলে বিএম ডিপোর জীবন ও সম্পদের বিশাল ক্ষতি এড়ানো যেত। মালিকপক্ষ, বন্দর কর্তৃপক্ষ সর্বোপরি সরকার এই দায় এড়াতে পারে না। ভবিষ্যতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে এর নির্মোহ-নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের চিহ্নিত করে তাদের দ্রুত আইনের আওতায় আনতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে আন্তঃজেলা মালামাল পরিবহন সংস্থা ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান মালিক সমিতির সভাপতি লতিফ আহাম্মদ, বাংলাদেশ ট্রাকচালক শ্রমিক ফেডারেশনের জেনারেল সেক্রেটারি ওয়াজি উল্লাহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।