রেলসেতুতে লোহার বদলে বাঁশ দিয়ে জোড়াতালি, ঝুঁকি নিয়ে চলছে ট্রেন

Passenger Voice    |    ১১:১৫ এএম, ২০২১-০৯-১০


 রেলসেতুতে লোহার বদলে বাঁশ দিয়ে জোড়াতালি, ঝুঁকি নিয়ে চলছে ট্রেন

সিলেটে রেলসেতুতে বাঁশ ও কাঠ ব্যবহার করে জোড়াতালি দিয়ে ঝুঁকিপূর্ণভাবে ট্রেন চলাচল করছে। রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলীয় জোনের সিলেট-মাইজগাঁও-আখাউড়া রেললাইনে ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার রেলসেতুর স্লিপারে বাঁশের ফালি ব্যবহার করা হয়েছে।

উপজেলার মাইজগাঁও রেলস্টেশনের এক কিলোমিটার দক্ষিণে পুরানগাঁও এলাকায় ৩৭ নম্বর সেতুর (দমদমার ব্রিজ নামে পরিচিত) এমন চিত্র দেখা গেছে। এ অবস্থায় ট্রেন চলাচলের সময় বড় দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।

অনুসন্ধানে জানা যায়, চলতি বছরের ৫ ফেব্রুয়ারি উপজেলার বিয়ালীবাজার এলাকায় পাগলার রেলসেতু (৩৮ নম্বর) তেলবাহী ট্রেন লাইনচ্যুত হওয়ার পেছনে চা-বাগান থেকে নেমে আসা ছড়ার সেতুর নড়বড়ে অবস্থাকে দায়ী করা হয়।

ট্রেন লাইনচ্যুত হওয়ায় চারটি অয়েল ট্যাংকার থেকে ১ লাখ ৬০ হাজার লিটার তেল ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পাগলাছড়া নামের ওই এলাকায় দুর্ঘটনার পরপরই ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, ছোট সেতুর পুরোটাই নড়বড়ে। স্লিপারের সঙ্গে যেসব কাঠ দেওয়া হয়েছে, সেগুলো পুরোনো।

আরো পড়ুন >>>>>> চিরচেনা রূপে দৌলতদিয়া ফেরিঘাট, স্বস্তি ফিরেছে চালকদের

যাত্রী ও মালবাহী ট্রেন সেখানে গিয়ে গতি কমিয়ে চলতে হয়। দুর্ঘটনার পর রেলওয়ের ৬টি ইউনিটের ২শ কর্মী টানা ২৪ ঘণ্টা সংস্কার কাজ করেন। পাগলাছড়ার সেতুর কাছে ট্রেন লাইনচ্যুত হওয়ার পর ওই এলাকায় জরুরি সংস্কারের পর রেলসেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

পুরানগাঁও গ্রামে রেলসেতুর স্লিপারগুলো যাতে নড়াচড়া না করে সেজন্য বাঁশ ও কাঠ লাগিয়ে ক্লিপ মারা হয়েছে। দমদমার ও পাগলার দুটি সেতুর বেহালের পরও প্রতিদিন মারাত্মক ঝুঁকি নিয়ে সিলেট-ঢাকা, সিলেট-চট্টগ্রাম রুটে ট্রেন চলাচল করছে। স্থানীয় পুরানগাঁওয়ের বাসিন্দা আলতাফ মিয়া অভিযোগ করে বলেন, কয়েক মাস আগে রেলওয়ের লোকেরা সেতুতে বাঁশ দিয়ে মেরামত করেছে।

সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, দীর্ঘদিন থেকে এই রেলসেতুগুলো খুবই নাজুক অবস্থায় রয়েছে। কয়েক বছর ধরে রোদ-বৃষ্টিজনিত কারণে কাঠের স্লিপারগুলো পচে গলে নষ্ট হয়ে যাওয়ায় সেতুগুলোর সিংহভাগ জায়গার জয়েন্ট ক্লিপ খুলে গেছে। এছাড়া সেতুর ওপরের স্লিপারের নাটবল্টুগুলো খুলে এলোমেলো অবস্থায় পড়ে আছে। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রায় শত বছর আগে নির্মিত এসব সেতু সংস্কার না করায় কাঠের স্লিপারগুলো নষ্ট হয়ে গেছে।

মাইজগাঁও রেলওয়ে স্টেশনের মাস্টার মনির হোসেন বলেন, ট্রেন চলাচলের সময় স্লিপারগুলো যাতে নড়াচড়া করতে না পারে সেজন্য বাঁশ দিয়ে প্রটেক্ট করা হয়েছে। সেতুটি সংস্কার পরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে। এ বিষয়ে জরুরিভিত্তিতে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য ঊর্র্ধ্বতন কর্মকর্তাদের একাধিকবার তাগিদ দেওয়া হয়েছে।